শহরের সৌন্দর্যহানিকর ‘অবৈধ’ সাইনবোর্ড উচ্ছেদ শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। অভিযানের প্রথম দিন গতকাল নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে তিন ট্রাক সাইনবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুফিদুল আলম।
দীর্ঘদিন ধরেই নগরবাসীর অভিযোগ ছিল, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদকালে উচ্ছেদ হওয়া বিলবোর্ডের জায়গা দখল করে নিয়েছে সাইনবোর্ড। অনুমোদনহীন যত্রতত্র স্থাপিত এসব প্রচারণামূলক সাইনবোর্ড একদিকে যেমন নগরের সৌন্দর্যহানির কারণ হয়ে ওঠেছে, অন্যদিকে খাতগুলো থেকে কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে চসিক। বিষয়টি নিয়ে গতকাল শনিবার দৈনিক আজাদীতে ‘সাইনবোর্ডে সৌন্দর্যহানি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে চসিক।
এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলা এ অভিযানে ৮ রাজস্ব সার্কেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পরিচ্ছন্ন ও প্রকৌশল বিভাগ অংশ নেয়।
চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুফিদুল আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, পুরো শহরে পাঁচ শতাধিক সাইনবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ করেছি। কিছু কিছু জায়গায় বড় সাইজের সাইনবোর্ড ছিল। অনেক জায়গায় বঙ দিয়ে লাইটিং সাইনবোর্ড দেখেছি। সব উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, টেরিবাজার থেকে প্রচুর সাইনবোর্ড উচ্ছেদ করেছি। চকবাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্ট একেবারে ক্লিন করে ফেলা হয়েছে। মাসুম ক্লথের নামে একটি সাইনবোর্ডের অনুমোদন আছে, কিন্তু পুরো শহরে তারা মনে হয় একশ সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। তবে রেয়াজুদ্দিন বাজার ফুটওভার ব্রিজের সাথে থাকা বড় দুটি সাইনবোর্ড কারিগরি সাপোর্ট কম থাকায় অপসারণ করা হয়নি বলে জানান তিনি।
অভিযানে অংশ নেয়া পরিচ্ছন্ন ও বিভিন্ন সার্কেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একটি টিম দুই নম্বর গেইট, প্রবর্তক মোড়, পাঁচলাইশ, মুরাদপুর ও ষোলশহর এলাকা থেকে ১২০টি সাইনবোর্ড ও ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ করেছে।
এছাড়া দেওয়ানহাট থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত ১৫০টি, বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে আগ্রাবাদ, সিঙ্গাপুর মার্কেট, জাম্বুরি ফিল্ড এবং জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘর পর্যন্ত অংশ থেকে ৪০টি সাইনবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ করা হয়।
অলংকার থেকে সিটি গেইট পর্যন্ত প্রধান সড়কের পুরোটাই সাইনবোর্ড ও ব্যানার-ফেস্টুন মুক্ত করা হয়। এখান থেকে ৮০টি সাইনবোর্ডসহ প্রায় ২৫০টি ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ করা হয়েছে।
আন্দরকিল্লা, টেরিবাজার, কোতোয়ালী, নিউমার্কেট, রেয়াজুদ্দিন বাজার ও স্টেশন রোড থেকে এক ট্রাক এবং চকবাজার, কলেজ রোড, চট্টেশ্বরী রোড থেকে শতাধিক সাইনবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ করা হয়।
অপরদিকে এদিন ইপিজেড থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত অংশ থেকে এক ট্রাক ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই এলাকায় সাইনবোর্ড তুলনামূলক কম ছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। উচ্ছেদ হওয়া বেশিরভাগ সাইনবোর্ড ছিল বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের। এছাড়াও কিছু সাইনবোর্ড শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসক ও কোচিং সেন্টারের বলে জানা গেছে।