চট্টগ্রাম নগরীর মৎস্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রাকিব ফিশের কর্মচারী আবদুর রহিম অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েননি। টাকাগুলো হাতিয়ে নিতে নাটক সাজিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। নাটক সাজিয়ে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনা উন্মোচন করেছে পুলিশ। গতকাল আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তারের পর আত্মসাৎকৃত ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর মৎস্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রাকিব ফিশের কর্মচারী আবদুর রহিম প্রতিষ্ঠান প্রধান মো. ইউসুফের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পাহাড়তলী শাখার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করে। আবদুর রহিম বিকাল ৪ টার দিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাওনা পাহাড়তলী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মনিরের মাছ দোকান থেকে ৬০ হাজার টাকা বুঝে নেয়। টাকাগুলো নিয়ে রানী রাশমনী ঘাটের উদ্দেশ্যে সে রওয়ানা হয়। কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদ কর্মচারী আবদুর রহিম রানী রাশমনি ঘাটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে না পৌঁছায় মো. ইউসুফ ও পার্টনার আবদুর রহিমের খোঁজে পাহাড়তলী বাজারে আসেন। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ওই রাতে মো. ইউসুফ ডবলমুরিং থানায় আসেন। কিছুক্ষণ পরে বাদী জানতে পারেন তার কর্মচারী আবদুর রহিমকে সীতাকুণ্ড থানাধীন ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কালু শাহ্ মাজারগেটের কাছে অজ্ঞান অসহায় পাওয়া যায়। কর্মচারী আবদুর রহিমকে টাকার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, কিভাবে সে কালু শাহ মাজারের কাছে গেল কিছুই জানে না। কিছুক্ষণ কথা বলেই সে আবার চোখ বন্ধ করে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে আবদুর রহিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২ দিন চিকিৎসা নেন।
মামলার পর ডবলমুরিং মডেল থানা পুলিশ এসআই ইমান হোসেন পাহাড়তলী বাজার ও আশপাশের সড়কে সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনা সংশ্লিষ্ট কোনো ফুটেজ পাননি। তবে পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার শপিং কমপ্লেক্সের সামনের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় আবদুর রহিম ঘটনার দিন বিকেল ৫ টার পর শপিং ব্যাগে করে টাকা নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিকভাবেই পায়ে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছে। এ ঘটনায় আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
মামলা রুজু পরবর্তীতে এসআই ইমান হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিমের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিম স্বীকার করে ঘটনার দিন বিকাল ৫ টার পর সে ওই টাকা নিয়ে অলঙ্কার মোড় থেকে বাসযোগে নোয়াখালীর চরজব্বর থানাধীন তার নিজ বাড়িতে যায়। সেখানে শয়ন কক্ষে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে একটি প্লাস্টিকের বক্সে টাকা রেখে আবার চট্টগ্রামে ফিরে এসে সীতাকুণ্ড থানাধীন কালুশাহ মাজারের কাছে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে শুয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন তাকে লেবু,পানি ইত্যাদি খাইয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে।
কর্মচারী আবদুর রহিমের স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে ডবলমুরিং মডেল থানার এসআই ইমান হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম নোয়াখালীর চরজব্বর থানাধীন চরমজিদ গ্রামের আসামির বসতঘর থেকে ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা উদ্ধার করেন।