প্রবাসী ফুটবলারদের তিন দিনের ট্রায়াল শেষ হয়েছে। আমেরিকা, ইতালি, সুইডেনসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ৪৯ জন প্রবাসী ফুটবলার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কোচদের সামনে বসেছিলেন পরীক্ষায়। সোমবার ট্রায়ালের শেষ দিনে হলো দুটি ম্যাচ। এরপর তাদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হলো। কিন্তু তিন দিনের ট্রায়ালের ফল খেলোয়াড়েরা কবে জানবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল না। ‘বাফুফে নেক্সট গ্লোবাল স্টার’–এই নামে ট্রায়ালের আয়োজন করে দেশের ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থাটি। তিন দিনের আয়োজনের শুরুর দুই দিনে ট্রায়াল হয় ‘ক্লোজ–ডোরে।’ শেষ দিনে প্রেস বঙে গণমাধ্যমকর্মীদের ও গ্যালারিতে বসে সমর্থকদের ম্যাচ দেখার সুযোগ মেলে। এক ম্যাচের দেখায় প্রবাসীদের স্কিল, দক্ষতা, গতি, ফিটনেস, টেকনিক্যাল–ট্যাকটিক্যাল বিষয়ের পূর্ণতা, অপূর্ণতা নিয়ে চূড়ান্ত রায় দেওয়া কঠিন। তবে দুই ম্যাচে অনেকের পায়ের কারিকুরি মুগ্ধ করেছে গ্যালারিতে আসা দর্শকদের। প্রথম ম্যাচটি হয়েছে অনূর্ধ্ব–১৯ দলের। তাদের খেলায় অবশ্য দেখা গেল যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিটোশোক চাকমার পায়ে বল গেলেই গ্যালারিতে উচ্ছ্বাসের ঢেউ বইতে। ব্রুকলিন এফসিতে খেলা সাদা চুলের এই তরুণের শারীরিক গড়ন ভালো, বল নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা, মাঝমাঠ থেকে বক্সে তার গতিময় পদচারণা মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। জালের দেখাও পেলেন একবার। লাল–সবুজের জার্সি গায়ে তুলতে মুখিয়ে থাকার কথাও তিনি বললেন ইংরেজি–বাংলা মিশিয়ে। ‘ট্রায়াল ভালো হয়েছে। সব কিছুই ভালো লেগেছে, এই মাঠ, গ্যালারিতে আসা সমর্থক। আমি চাই, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে। ট্রায়াল ভালো হয়েছে বলে আমি আশাবাদী।’ অনূর্ধ্ব–১৯ সবুজ দলে খেললেন আমির সামি। বার্সেলোনায় ট্রায়াল দিয়ে আসা যুক্তরাষ্ট্রের এই উইঙ্গার ঝলক দেখালেন মাঝেমধ্যে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে তিনিও বললেন ট্রায়াল ভালো দেওয়ার কথা। অনূর্ধ্ব–২৩ দলের ম্যাচ নিয়েই সবার আগ্রহ ছিল বেশি। অনূর্ধ্ব–১৯–এর তুলনায় অনূর্ধ্ব–২৩ দলের খেলা হলো গোছালো। পাস, আক্রমণ, ট্যাকলগুলো হলো আরও বেশি নিখুঁত। ‘সবুজ’ দলের হয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সঞ্জয় করিম, ইংল্যান্ড প্রবাসী তোফায়েল তানিম আলো ছড়ালেন। সঞ্জয় এর আগে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দল পুলিশ এফসিতে ট্রায়াল দেন, কিন্তু টেকেননি। ‘নীল’ দলে আশিকুর রহমান, আমির খান, নাবিল নাসির, আরমান আইয়াজ ঝলক দেখালেন। আরমান কয়েকটি শট নিলেন পোস্টে, মাঠ জুড়ে খেলার সামর্থ্যও দেখালেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই স্ট্রাইকার। আথলেতিকো বাফোর্ড এফসির হয়ে এক ম্যাচে চার গোল করার গল্প টেনে তিনি শোনালেন লাল–সবুজের জার্সি গায়ে তোলার স্বপ্নের কথা। ‘আমার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। আমি নানার জন্য বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই। আজ গোল করার খুব ইচ্ছা ছিল কিন্তু পারিনি।’ বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন এই প্রবাসীদের পূরণ হবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। কেননা, ট্রায়ালের পর বাফুফে কাউকে কোনো ‘সবুজ সংকেত’ দেয়নি। সবার পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রবাসীদের ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ট্রায়াল শেষে সবাইকে সার্টিফিকেট দেওয়ার মাধ্যমে শেষ হয় আয়োজন।