অপু বাইক কেনেন এমপির বাসা থেকে চাঁদা নেওয়ার দিন

| রবিবার , ৩ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর বাসা থেকে একটি নতুন মোটরসাইকেল উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে উদ্ধার মোটরসাইকেলটি ১৭ জুলাই কেনা হয়েছিল, যেদিন ওই এমপির বাসা থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। মোটরসাইকেলটি সেই চাঁদার টাকায় কেনা কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খবর বিডিনিউজের।

গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যার পর গুলশান ২ নম্বরে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা নিতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত পাঁচজন। গত শুক্রবার ঢাকার গোপীবাগ এলাকা থেকে সর্বশেষ জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন ৫ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হলেও অপু পালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

অপুকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাসা থেকে মোটরসাইলে উদ্ধারের তথ্য দিয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, মোটরসাইকেলটি ১৭ জুলাই নতুন কেনা হয়েছে। সেটি কেনার অর্থের উৎস আমরা খতিয়ে দেখছি।

গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে নারী এমপির বাসায় চাঁদা দাবির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেন তালেবুর রহমান। সেদিন ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ঘটনার সূত্রপাত গত ১৭ জুলাই। সকাল আনুমানিক ১০টার সময় জানে আলম অপু ও রিয়াদ নামে দুজন ওই বাসায় প্রথম যান। গিয়ে তারা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং সেদিনই তারা ১০ লাখ টাকা নগদ নিয়ে আসেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। পরে ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টায় ওই বাসায় গিয়ে বাকি ৪০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। ২৬ জুলাই আরও লোকজন বাড়িয়ে সেখানে যান এবং বাকি টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।

তখন পুলিশকে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় এবং একজন পালিয়ে যান। সেই পলাতক জানে আলম অপুকে ঢাকার গোপীবাগ এলাকা থেকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ঘটনার দিন গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক রিয়াদের বাবু বাজারের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক এবং পরে বাড্ডার আরেকটি বাসা থেকে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করার কথাও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। গ্রেপ্তার বাকি চারজন হলেনসাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন।

এ ঘটনার পর সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। পাশপাশি কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারা দেশের সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

চাঁদাবাজির মামলার রিমান্ড শুনানিতে অপু আদালতকে বলেছেন, রিয়াদ বাদে আমরা বাকিরা সবাই নির্দোষ। রিয়াদের ডাকে গিয়ে ফেঁসে গেছি। গতকাল ঢাকার মহানগর হাকিম নাজমিন আক্তারের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে একথা বলে তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারা ও লোহাগাড়ায় সাপের কামড়ে কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধকাপ্তাইয়ে বন্য হাতির পাল, জঙ্গলে ফেরাল বন বিভাগ