টেকনাফে অপহরণের ৭২ ঘণ্টা পর ডাকাতের আস্তানা থেকে ৩ বনকর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১ টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। এসময় দুর্বৃত্তদের ফেলে যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হলেও তাদের শারীরিক নির্যাতন চালায় অপহরণকারীরা। উদ্ধারকৃতরা হলো আবদুল মালেকের ছেলে মোহাম্মদ শাকের (২৪), মৃত আবদুল শুক্কুরের ছেলে আব্দুর রহিম (৩৭) ও মৃত বকসু মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান (৩২)।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ন্যাচার পার্কে বন পাহারা দিতে গিয়ে গত শুক্রবার নিখোঁজ হন তিন বনকর্মী। তাদের পাহাড়েসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজার পরও পাওয়া যায়নি। এর একদিন পর মোবাইলে ৬০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে জানতে পারে তারা পাহাড়ি সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের হাতে জিম্মি রয়েছেন। সর্বশেষ ১০ লাখ টাকা করে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছিল। এদিকে এলাকাবাসী, বন বিভাগ ও পুলিশ কয়েক দফা অভিযান চালালেও উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু আশা ছেড়ে না দিয়ে বিরামহীনভাবে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে খবর নিয়ে বনপ্রহরী বা কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ (সিপিজি) দলের অর্ধ শতাধিক সদস্য ও দেড় শতাধিক জনগণ, পুলিশ ও বনবিভাগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকাল থেকে পাহাড়ে উদ্ধার অভিযান চালায়। গহীন ওই পাহাড়ে পায়ের চিহ্ন ও বিভিন্ন আলামত ধরে সামনের দিকে এগুতে থাকে। এক পর্যায়ে দুপুর ১ টার দিকে তৈয়ব কাটা নামক গহীন পাহাড়ের উত্তরে দুর্বৃত্তদের আস্তানা দেখতে পেয়ে হানা দিলে দিকবিদিক প্রায় ১৬–১৮ জন দুর্বৃত্ত পালিয়ে যায়। পরে ওই আস্তানা থেকে হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় অপহৃত তিনজনকে উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় মেম্বার মোহাম্মদ আলী জানান, পুলিশ, বন বিভাগ ও স্থানীয় জনগণের অক্লান্ত অভিযানে অক্ষতবস্থায় তিন জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) নাসির উদ্দীন মজুমদার জানান, গভীর পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে ন্যাচার পার্কের বন পাহারা দিতে গিয়ে হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার বাসিন্দা ও সিপিজি বন পাহারা দলের এই তিন সদস্য নিখোঁজ হয়েছিলেন।