সীতাকুণ্ডের অপহরণের চারদিন পর গত সোমবার রাতে বাসযাত্রী আবুল কালামের সন্ধান মিলেছে চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত শনিবার মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে। তবে যারা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে তাদের এখনো চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে অপহরণ মামলার ২ নং আসামি মাদক ব্যবসায়ী আবুল বাশারকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা মৃত আবদুলের ছেলে।
জানা যায়, গত শুক্রবার থেকে কালামকে উদ্ধারে বাড়বকুণ্ড পাহাড় অভিযান চালায় পুলিশ। অপরদিকে গত তিন দিন ধরে কালাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ এ খবর পায় সোমবার সন্ধ্যায়। পুলিশের ধারণা, কালামের পরিবার বিষয়টি জানত। তার স্বজনরা প্রথমে জানান, তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কথা জানান। সোমবার রাতে সীতাকুণ্ড থানা–পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়। কীভাবে কালাম হাসপাতালে গেলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে।
সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার কালাম অপহরণের শিকার হন। শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর পাহাড়তলী সরাইপাড়া এলাকার বাসিন্দা টিপু বেগম দেবর আবুল কালাম অপহরণ হয়েছে মর্মে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা এজাহারে উল্লেখ করেন, তার দেবর আবুল কালাম গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে চট্টগ্রাম শহর হতে বাস যোগে ঢাকা যাওয়ার পথে সীতাকুণ্ডে বাড়বকুণ্ডে অপহরণের শিকার হন। পরে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন লোক মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের টাকা দিতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন আবুল কালামের বোনসহ তিন আত্নীয়। পরে তারা মুক্তি পেলেও খোঁজ মিলেনি অপহৃত আবুল কালামের।
সীতাকুণ্ড থানার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থল, সীতাকুণ্ড, বাড়বকুণ্ড ও পার্শ্ববর্তী দুর্গম পাহাড়সহ সকল স্থানে ৪ দিন অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। পুলিশের অভিযানের কারণে ভীত হয়ে অপহরণকারীরা প্রথমে তিনজন ভিকটিমকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় এবং পরবর্তীতে অপহৃত কালামকে ছেড়ে দিলে তিনি মুমুর্ষবস্থায় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
ওসি জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় আটক আসামি আবুল বাশার জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন, অপহরণকারী ব্যক্তিদের সাথে ভিকটিম কালামের পূর্ব পরিচয় ও সখ্যতা রয়েছে। তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মাদক বিক্রির টাকা নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। আবুল কালামকে বেদড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে তারা। চিকিৎসা শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। গতকাল মঙ্গলবার আটক বাশারকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত অব্যহত রয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত চিত্র উম্মোচিত হবে বলে জানান ওসি।