আমাদের দেশে প্রায়শই দেখা যায় কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে রাজনৈতিক দলগুলো অপরাধীর পক্ষ–বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে একধরনের ধোঁয়াশা তৈরি করে। যদি অপরাধী হয় বিরোধী পক্ষের তাহলে অপরাধের প্রকৃতি যাই হোক, সেটিকে ফুলিয়ে–ফাঁপিয়ে প্রচার করা হয়। পক্ষান্তরে, নিজ দলের কেউ হলে তা ষড়যন্ত্র বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। এতে প্রকৃত ঘটনা ভিন্নখাতে মোড় নেয়, মূল অপরাধ চাপা পড়ে যায়। পক্ষ–বিপক্ষের কাদা ছোড়াছুড়িই হয়ে উঠে মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
প্রশ্ন হলো, অপরাধীর দায় যদি শুধু দলের হয়, তবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব কোথায়? রাষ্ট্র কেন নিরপেক্ষ অবস্থানে দাঁড়িয়ে অপরাধ দমন ও বিচার নিশ্চিত করে না? কেন বিচারব্যবস্থা দলীয় ভারসাম্যে দুলে? আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি ভয়ঙ্কর প্রবণতা গড়ে উঠেছে, অপরাধের বিচার নয়, অপরাধীর দলের পরিচয়ই হয় আলোচনার মূল বিষয়। জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হোক, কিংবা কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলের ঠুনকো কোন বিষয় সবখানেই এই দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির ছায়া স্পষ্ট। এর ফলে বাড়ছে বিচারহীনতা, কমছে জনগণের আস্থা। অপরাধীরা পাচ্ছে এক ধরনের উৎসাহ ও নিরাপত্তার আশ্বাস।
মনে রাখতে হবে, অপরাধীর কোনো দল থাকতে পারে না। অপরাধই তার সবচেয়ে বড় পরিচয়। সে যত শক্তিশালী হোক, নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য শাস্তি তার প্রাপ্য এটাই হওয়া উচিত রাষ্ট্রের নীতিগত অবস্থান।