রাজপরিবারে পা রাখার পর থেকেই ঘটনার শুরু। ওই সময় নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা ভাবতেন তিনি। এমনকি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়ও বারবার ঘুরেফিরে আসত সেই চিন্তা। গত রোববার ওপরা উইনফ্রের কাছে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এমন বিস্ফোরক দাবি করেছেন মেগান মার্কল। এছাড়া বাকিংহাম প্যালেসকে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগেও বিদ্ধ করেছেন। মেগানের দাবি, রাজকুমার হ্যারি ও তার প্রথম সন্তানের জন্মের আগেই তার গায়ের রং নিয়ে আলোচনা হতো। নিজে যখন মানসিক সমস্যায় লড়ছেন, সে সময় সাহায্যের হাত বাড়ায়নি ব্রিটেনের রাজপরিবার।
রোববার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশনে হ্যারি ও মেগানের সাক্ষাৎকার নিয়ে উৎসাহের অন্ত ছিল না। অনেকেই ভেবেছিলেন, রাজকীয় পরিচয় ত্যাগ করে বাকিংহাম প্যালেস থেকে সরে যাওয়ার পর তাদের নতুন জীবন নিয়ে কিছু বলবেন তারা। তবে ওপরার কাছে ঘণ্টা দুয়েকের সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক তীর ছুড়েছেন মেগান।
হ্যারির সঙ্গে বিয়ের পর ট্যাবলয়েড থেকে পাপারাৎজিদের নিয়মিত নিশানায় ছিলেন মেগান। তার প্রভাবও পড়েছিল মেগানের মনে। সঙ্গে ছিল তাদের প্রথম সন্তানের গায়ের রং নিয়ে জল্পনা। শ্বেতাঙ্গ বাবার মেয়ে মেগানের মায়ের মতোই কি তাদের প্রথম সন্তানের গায়ের রং কালো বা বাদামি হবে? প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছিল রাজপরিবারের এক সদস্যের কথাবার্তায়। তা নিয়ে দুশ্চিন্তাও প্রকাশ করেছিলেন ওই সদস্য। এ দাবি করলেও সেই সদস্যের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি মেগান। তিনি বলেছেন, আমি কোনোভাবেই বেঁচে থাকতে চাইতাম না। সবসময় এমন ভয়াবহ চিন্তা মাথায় ঘুরত। আর সেটা খুবই কঠোর, বাস্তব চিন্তা। আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় ঘোরাফেরা করার সময় কেমন মনে হতো, ওপরার কাছে তা-ও খোলাসা করেছেন তিনি। খুব ভয় পেতাম। কারণ সেটাই আমার কাছে একেবারে সত্যি ছিল।
২০১৮ সালের ১৯ মে মেগান ও হ্যারির বিয়ে হয়। পরের বছর তাদের প্রথম সন্তান আসে। তবে ৬ মে ছেলে আর্চির জন্মের আগে থেকেই তার গায়ের রং নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল।
ডিউক এবং ডাচেস অব সাসেঙ হিসাবে গত বছরের মার্চে রাজপরিবার ত্যাগ করে উত্তর আমেরিকায় চলে যান হ্যারি-মেগান। তারপর থেকে টেলিভিশনের প্রাক্তন অভিনেতা মেগানকে ‘জেদি’, ‘ছক কষে চলা’ এবং ‘বখে যাওয়া’ তকমা দিতে ছাড়েনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশ। হ্যারির পাশাপাশি তারও স্বার্থপর তকমা জুটেছে।
এদিকে সাক্ষাৎকারের পর ঝড় উঠতে পারে রাজপরিবারে। কারণ, ১৯৯৫ সালে হ্যারির মা ডায়ানা নিজের একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া থেকে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে ভঙ্গুর বিয়ের নানা কথা প্রকাশ্যে আনার পর এতটা বিস্ফোরক হননি রাজপরিবারের কোনো সদস্য। তবে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত রাজপরিবার থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।