দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব্ব বজায় রাখল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দল। তাদের মাটিতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয়ের পর এবার জিম্বাবুয়েতে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপাও জিতল বাংলাদেশের যুবারা। গতকাল জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বাংলাদেশের যুবারা ৩৩ রানে হারিয়েছে দক্ষিন আফ্রিকাকে। ফলে জিতে নিয়েছে শিরোপা। এই ত্রিদেশীয় সিরিজে সাত ম্যাচের কেবল একটিতে হেরেছে আজিজুল হাকিমের দল। সেটি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সিরিজে গতকালের ফাইনাল সহ চারবার মুখোমুখি হয় দুদল। যেখানে বাংলাদেশের জয় তিনটি। গতকাল রিজান হোসেনের দুর্দান্ত অল রাউন্ড নৈপুণ্যের পর কালাম সিদ্দিকীর দুর্দান্ত ব্যাটিং এবং আল ফাহাদের দারুণ বোলিং বাংলাদেশকে শিরোপা জিতিয়ে দেয়। ব্যাট হাতে ৯৬ রানের দারুন ইনিংস খেলার পর বল হাতে ৫ উইকেট নিয়েছেন রিজান। তাই সেঞ্চুরি মিস করলেও বল হাতে ৫ উইকেট নিয়ে তৃপ্ত এই অল রাউন্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর এবার ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতে দারুন এক সফর শেষ করে ফিরছে বাংলাদেশের যুবারা। দলের ব্যাটাররা প্রথমে জয়েল ভিত রচনা করে দিয়েছিল দারুন ব্যাটিং করে। পরে বোলাররা তাদের দায়িত্বটা পালন করেছে সুচারুভাবে। আর তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় শিরোপা জেতা। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের যুবাদের শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। ৪১ রানের মাথায় ওপেনার রিফাতকে হারায় বাংলাদেশ। সে ধাক্কা না সামলাতেই আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারকে হারায়। ২১ রান করেন আবরার। অধিনায়ক আজিজুল হাকিম ৭ রান করে ফিরে এলে ৬৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দল। চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন কালাম সিদ্দিকী এবং রিজান হোসেন। দুজন মিলে ১১৭ রানের বিশাল জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বড় পুঁজির ভিত গড়ে দেন । ৭৫ বলে ৬৫ রান করে কালাম সিদ্দিকি ফিরলে ভাঙ্গে এজুটি। ৬টি চার মেরেছেন কালাম। পঞ্চম উইকেটে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহকে নিয়ে ৬৩ রানের আরেকটি জুটি করেন রিজান। কিন্তু সেঞ্চুরিটা তুলে নিতে পারলেননা রিজান। ৯৬ বলে ৯৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে অপ্রত্যাশিত রানআউটের শিকার হন তিনি। ১০টি চার মেরেছেন রিজান। শেষ দিকে বাংলাদেশের রান বাড়িয়ে নিতে অবদান রাখেন আব্দুল্লাহ। ২৯ বলে ৩৮ রান করেন তিনি। তার সঙ্গে ৮ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন সামিউন বশির। আর তাতেই বাংলাদেশের ইনিংস গিয়ে দাড়ায় ৫ উইকেটে ২৬৯ রানে।
জবাবে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব–১৯ দল শুরুটা মন্দ করেনি। দুই ওপেনার জুরিচ এবং আদনান মিলে ৫৯ রান যোগ করেন। ৩১ বলে ৪০ রান করা আদনানকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন আল ফাহাদ। ৭ রান পর আল ফাহাদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেন আরেক ওপেনার জুরিচও। ১৯ রান করেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক বুলবুলিয়া এবং জেসন রোলস মিলে যোগ করেন ৪৫ রান। ৩১ রান করা বুলবুলিয়াকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন রিজান। এই রিজানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে আরমান মানাক ফিরলে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৬৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলা দক্ষিন আফ্রিকাকে টানার চেষ্টা করেন ব্যান্ডিলে এবং সনি। এদুজন ৫৯ রান যোগ করলেও তা দলের জয়ের জন্য যতেষ্ট ছিলনা। কারন তখন রান রেট ক্রমশই বাড়ছিল। ৩২ বলে ৩৪ রান করা সনিকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গে রিজান হোসেন। এটি তার তৃতীয় শিকার। এরপর সনি এবং মাজোলাকে তুলে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৩৬ রানে থামিয়ে দেন রিজান হোসেন। এই অল রাউন্ডার ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩৪ রানে। ৫০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন আল ফাহাদ। ২টি উইকেট নিয়েছেন স্বাধীন ইসলাম।