অনুমোদন পেল ৫০০ শয্যার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বুধবার , ২১ মে, ২০২৫ at ৭:৩৯ পূর্বাহ্ণ

মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দীর্ঘ ১৭ বছর পর ৫০০ শয্যার হাসপাতাল অনুমোদন পেলো কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ। গতকাল মঙ্গলবার এসিসিজিপির সভায় এটি চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সোহেল বকস জানান, তার কাছে খবর এসেছে এসিসিজিপির সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি। এখনো অফিসিয়াল পত্র হাতে আসেনি, হয়তো আজকে চলে আসতে পারে। বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অধ্যক্ষ বলেন, আশা করছি দ্রুতই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে। নির্মাণ ব্যয় কত এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ও কাগজ হাতে এলে বলতে পারবো।

সংকটের যাঁতাকলে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ

দাপ্তরিক সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদনের পর ২০০৮ সালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের পাশে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শুরু হয় কলেজের কার্যক্রম। এরপর শিক্ষার্থী ও কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০১৭ সালে ঝিলংজায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে শুরু হয় শ্রেণি কার্যক্রম। কিন্তু হাসপাতাল না থাকায় শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস করতে আসতে হতো ১০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর হাসপাতালে। একই সাথে উন্নত ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রয়ে যায় জেলার লোকজন।

শিক্ষার্থীরা জানান, নামে আধুনিক মেডিকেল কলেজ হলেও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে আছে মাত্র দুটি সাদামাটা বাস। সেইসঙ্গে চরম শিক্ষক সংকট, আছে আবাসন সংকটও। পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হবে, এমন প্রত্যাশার প্রহর গুণতে গুণতে বিদায় নিয়েছে কলেজের ১৪টি ব্যাচ। একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজের সঙ্গে থাকার কথা ৫০০ শয্যার হাসপাতাল। ন্যূনতম ২০টির মতো বিভাগে চিকিৎসাসেবা। কিন্তু এর কোনো ছোঁয়াই পায়নি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ। শূন্য পড়ে আছে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের অধিকাংশ পদ। ওএসডি মূলে সহকারী অধ্যাপককে কলেজে সংযুক্তি দিলেও মূলত জুনিয়র শিক্ষকদের দিয়ে কলেজটির কার্যক্রম জোড়াতালি দিয়ে চলছে।

এছাড়াও ১০ তলার একাডেমিক ভবনে নির্মাণ হয়েছে ৬ তলা। দুটি ছাত্রাবাসের ছয় তলা করে হওয়ার কথা থাকলেও তিনতলা করেই ফেলে রাখা হয়েছে। যার জন্য কক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে থাকতে হয় গণরুমে। শিক্ষার্থীরা বলেন, এতে করে ব্যাহত হয় নিয়মিত পড়াশোনা।

এদিকে হাসপাতাল অনুমোদনের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কক্সবাজারবাসী ও শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, হাসপাতাল নির্মাণ হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য আর ঢাকাচট্টগ্রাম যেতে হবে না। চাপ কমবে সদর হাসপাতালে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস ও গবেষণা যাবতীয় উন্নত শিক্ষা কার্যক্রম পাওয়া যাবে হাতের নাগালে।

স্থানীয় সচেতন সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, ২৬ লাখ জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি আছে ১২ লাখ রোহিঙ্গা। এছাড়াও এখানে সমাগম হয় লাখ লাখ পর্যটকের। সবমিলিয়ে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতাল খুবই অপ্রতুল। যেখানে নির্ধারিত আসনের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাই কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে এটি এই অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ হবে। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হলেই এখানে এমনিতেই থাকবে সিসিইউ, আইসিইউ ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারও।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্ত্রীসহ চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিসের পরিচালকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পরবর্তী নিবন্ধবসুন্ধরা চেয়ারম্যান ও স্ত্রী-সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদে ডেকেছে দুদক