‘জিনিস হারায় যার, ঈমান যায় তার’ এই বাক্যটি ছোট বেলা থেকে শুনা এটা প্রবাদ। মানুষ যখন কিছু হারায়, তখন অনুমান নির্ভর হয়ে একে, ওকে সন্দেহ করে। নিরপরাধ ব্যক্তির সাথে অপরাধীকে মিলিয়ে ভ্রান্ত ধারণা করা গর্হিত অপরাধ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ননা আছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কোনো বস্তু বা ব্যক্তি সম্পর্কে কুচিন্তা (ধারণা/অনুমান) থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, কুচিন্তা হলো সবচেয়ে (বড়) মিথ্যা কথা। কারও খারাপ বা দোষের খবর জানার চেষ্টা করো না, গোয়েন্দাগিরি করো না। পরস্পরের মধ্যে হিংসা–বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ করো না। আর পরোক্ষ নিন্দাবাদে একে অপরের পেছনে লেগে থেকো না; বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা; ভাই ভাই হয়ে থাকবে।’ (বুখারি, মুসলিম)।
আমাদের নিত্য জীবনে এরকম অহরহ কিছু ঘটনা ঘটে। অনুমান নির্ভর হয়ে আমরা মানুষকে অহেতুক সন্দেহ করে একটা নাজুক পরিস্থিতি তৈরী করি। অথচ যাকে নিয়ে অনুমান করা হচ্ছে, সে হয়ত বিষয়টির ধারে কাছেও নেই। কিছু মানুষ আছে প্রতিবাদী। তারা নিজের চাইতে অন্যের বিষয়ে বেশী সোচ্চার হয়, প্রতিবাদ করে, প্রচলিত কিছু বস্তা পঁচা নীতির সাথে তাল মেলাতে পারেনা। এটা তার সীমাবদ্ধতা না, এটা যোগ্যতা। সেই যোগ্যতাকে অবমূল্যায়িত করা মানে. সত্য ও সততার সাথে প্রতারণা করা। কিছু কিছু মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলো তারা নিজের অপকর্ম ঢাকতে গিয়ে বা অন্যের বাহবা নিতে গিয়ে, নিরপরাধ মানুষের উপর দায় চাপায়। এই দায় চাপানোর কারণে মানুষটির চারপাশে একটা অস্বস্তির দেয়াল তৈরী হয়। এই দেয়াল কতটা ভয়ঙ্কর, কতটা মানসিক যন্ত্রণার তা তারাই অনুমান করতে পারে, যারা এসব অনভিপ্রেত ঘটনার সম্মুখীন হয়। দৃঢ়চেতা মানুষগুলো তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সবার প্রিয় হতে পারেনা, প্রিয় হওয়ার প্রতিযোগিতায়ও নামে না। অহেতুক দায়ভারের কারণে, অন্তরে যে কষ্টের প্রলেপ পরে তা কখনো মুছে না। এসব মানুষ গুলো বরাবর পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গির। তারা মানুষের জন্য, প্রকৃতির জন্য যা করে তা কাউকে জানান দিয়ে করেনা। কোন কিছুর আশায়ও করেনা। তারা কর্ম আর ভাগ্য এই দুয়ের উপর নির্ভর করে। কে মূল্যায়ন করলো, কে বাহবা দিলো এসব ভাবনা তাদের মস্তিষ্কে আসেনা। কিছু না বললেও তাদের অন্তরে ক্ষরণ হয়। অভিশাপ না দিলেও, তারাও তো রক্ত মাংসের মানুষ। বিধাতা তাদের মধ্যে হাসি কান্না, আনন্দ, অনুভূতি, রাগ, ক্ষোভ দিয়েছে। তারা হয়ত অভিশাপ দেয়না। কিন্ত রুহের হায় বলে একটা কথা আছে। সেই রুহের হায়ের দায় কখন কার উপর কিভাবে এসে বর্তায় তা বিধাতা ছাড়া কেউ জানেনা। সুতরাং নিজের ঈমান, আকিদার কথা চিন্তা করে, অনুমান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।











