অনিবন্ধিত কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির হার বাড়বে। সরকারের নিবন্ধিত শিক্ষাক্রম অনুসারে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কমবে সেটি কখনো কাঙ্ক্ষিত নয়। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথেও তারা সারা দেশে সার্ভে করেছে। সেটা নিয়ে বেফাকের সঙ্গে কাজ করব। নিবন্ধনের বিষয়টা নিয়ে মাঠ প্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করব বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৪–এর প্রথম দিনের তৃতীয় অধিবেশনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নওফেল। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম রোমানা আলীসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। খবর বাংলানিউজের।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যৌন নিপীড়নের বিষয়ে আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখেছি অভিযোগ যখন উত্থাপিত হয়– যৌন নিপীড়ন বিরোধী কমিটিতে অভিযোগ তদন্তাধীন– যুক্তি দেখিয়ে অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলেও এক ধরনের প্রতিরক্ষা দেওয়া হয়। যেখানে নির্যাতন–নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে সেখানে কমিটি তদন্ত করুক বা না করুক দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পুলিশ যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে সেটি যাতে আমরা বন্ধ না করি।
ডিসিরা অনেক বিষয়ে কথা বলেছেন জানিয়ে নওফেল বলেন, নতুন কারিকুলামের কাজ শুরু হয়েছে, সেটার বিষয়ে নেতিবাচক কোনো অভিজ্ঞতার কথা তারা বলেননি। ফলে আমরা ধরে নিতেই পারি কারিকুলামের টিচিং লার্নিং প্রসেস শিক্ষক ও অভিভাবকরা গ্রহণ করেছেন। কারিগরি শিক্ষার সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, অনিবন্ধিত কওমি মাদরাসার বিষয়টি উঠে এসেছে। নুরানী মাদরাসার নামে যেগুলো খোলা হয়েছে সে বিষয়ে আমরা তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। মাদরাসার শিক্ষা বোর্ডের নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের বাইরে যারা খুলেছেন তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত নয়। সেক্ষেত্রে কীভাবে বেফাক তাদের ছয়টি বোর্ডের মাধ্যমে নিবন্ধন দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। একটি বয়সসীমা পর্যন্ত সেখানে যাতে জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করা হয়। নয়তো শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করতে পারবে না। এজন্য বেফাকের সঙ্গে কাজ করব। নিবন্ধনের বিষয়টাও যাতে মাঠ প্রশাসনের সাথে এবং আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সাথেও তারা সারা দেশে সার্ভে করেছে, সেটি নিয়েও আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করব।
মাদরাসার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, গতবছর কওমি মাদরাসার নেতা ও বোর্ডগুলোর সঙ্গে বসেছিলাম। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রমের আলোকে যে শিখনফল অর্জন করার কথা নির্দিষ্ট বয়সসীমায় তাদের প্রতিষ্ঠানে নিশ্চিত করা হচ্ছে কিনা। এজন্য এনসিটিবি থেকে তাদের কালিকুলামে প্রণীত বই পাঠিয়েছি, সেগুলো নিয়ে যাচাই বাছাই হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে সেই শিক্ষার্থীরা সেই যোগ্যতা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে বিদ্যালয় পর্যায়ে কাঙ্ক্িষত দক্ষতা যোগ্যতা না পেলে মাস্টার্স পর্যায়ে কীভাবে ধরে রাখতে পারবেন, সেটি তো একটি আলোচনায় থাকবেই। আমরা চাই কওমি মাদরাসায় যারা পড়াশোনা করছে তারা যাতে একটি বয়সসীমার মধ্যে নূন্যতম যে শিখনফল অর্জন করার কথা সেটি যাতে তারা পায়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। এক্ষেত্রে তাদেরকেও কঠোর হতে হবে। একটি কাঠামোর মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আনতে হবে।