ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বন্দি অবস্থায় কারাগারে মুশতাক আহমেদের ‘অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে’ কেন্দ্র করে একটি মহল ‘পানি ঘোলা করার চেষ্টা’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে গতকাল সোমবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, ছাত্রদল যেটি চেয়েছে, দেশে একটি ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশে একটি মহল পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। অতীতেও পানি ঘোলা করার চেষ্টা হয়েছে এবং তাতে কোনো লাভ হয়নি, এবারও কোনো লাভ হবে না। খবর বিডিনিউজের।
অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয় মুশতাক ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে গতবছর ৫ মে গ্রেপ্তার করার পর তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। তাদের জামিন আবেদন বেশ কয়েকবার নাকচ হয় আদালতে। গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দি অবস্থায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মুশতাকের মৃত্যু হলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় প্রতিবাদ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি নতুন করে জোরালো হয়ে ওঠে। মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রোববার বিক্ষোভ করতে প্রেসক্লাবের সামনে গেলে লাঠিপেটা করে ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। সে সময় সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহতও হন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রেসক্লাবকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে ছাত্রদল যেভাবে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে। হাজার হাজার ইট-পাথরের টুকরা তারা পুলিশের উপর নিক্ষেপ করেছে… প্রেসক্লাবে আমি নিয়মিত যাই, সেখানে তো কোনো পাথরের স্তূপ নেই, তার মানে এগুলো আগে থেকে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, পুলিশের সাথে ছাত্রদলের ঘটনা হয়েছে, পুলিশের সাথে সাংবাদিকদের বা প্রেসক্লাবের কোনো ঘটনা হয়নি। আমি আশা করব, যারা প্রেসক্লাবকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে, ছাত্রদলসহ যারা প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায়, তাদের অবশ্যই এ ধরনের ঘটনা প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করে ঘটানো উচিত না। তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রেসক্লাব একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান, প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠান, প্রেসক্লাব নিরপেক্ষ জাতীয় প্রতিষ্ঠান। সব রাজনৈতিক দল, মত ও পথের জন্য এটি উন্মুক্ত। সুতরাং সেখান থেকে যদি পুলিশের উপর হামলা হয়, লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করা হয়, সেটা খুবই অনভিপ্রেত।
কারাগারে মুশতাকের মৃত্যুর বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বেরিয়ে আসবে উনি কোনো ড্রাগ ব্যবহার করতেন কিনা, উনার কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে কিনা। কারা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল কিনা- সেটিও তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তবে এ মৃত্যুর জন্য আমি নিজেও ব্যথিত। এটা অনভিপ্রেত অবশ্যই। তদন্ত কমিটি হয়েছে, কমিটির মাধ্যমে সব বেরিয়ে আসবে নিশ্চয়।