অনর্থক স্বাস্থ্য পরীক্ষার অত্যাচার বন্ধ করুন

চিকিৎসকদের প্রতি আসিফ নজরুল

| রবিবার , ১৭ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

রোগীদের অনর্থক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে চিকিৎসকদের অনুরোধ জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের বিষয়ে বেশ কিছু সাধারণ অভিযোগ আমি প্রায়ই শুনি। যার মধ্যে রয়েছে চিকিৎসকরা ভালোভাবে রোগীর কথা না শুনেই ব্যবস্থাপত্র লেখেন এবং অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাতে দেন। অনর্থক এসব পরীক্ষা দেয়; যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেয়; এটা হওয়ার নয়। অনুগ্রহ করে এ অত্যাচার বন্ধ করুন। আপনারা এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন। উদাহরণ টেনে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমার বাসার কাজের লোক কিছু দিন আগে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিল। তাকে ১৪টা পরীক্ষা দেওয়া হয়। পরে ময়মনসিংহে পরিচিত এক চিকিৎসকের কাছে পরীক্ষা করানো ছাড়াই তিনি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। গরিব রোগীদের ওপর এ অত্যাচার বন্ধের অনুরোধও জানান আইন উপদেষ্টা। গতকাল শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।

বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএইচসিডিওএ) নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান হয়। আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের কোন মানুষটা বিদেশে যেতে চাই। ভারতে, ব্যাংককে এমন মানুষও চিকিৎসা নিতে যায়, যিনি জীবনে ঢাকা শহরে আসেন নাই। ত্যক্তবিরক্ত হয়ে বিদেশে যান। বন্ধ করুন তাদের বিদেশে যাওয়াটা। এখানে সেবা দিলে কখনোই মানুষ বিদেশে যাবে না।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বড় বড় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার নির্দিষ্ট সময় কেন বরাদ্দ থাকে? এটা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না। আইন উপদেষ্টা সরাসরি প্রশ্ন তুলে বলেন, চিকিৎসকরা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল? এ দেশে বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির মধ্যস্বত্বভোগী? কোন জায়গায় নামান আপনারা নিজেদের? রোগীদের কেন নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ কিনতে বলা হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে অন্যায় মুনাফা করা বন্ধ করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত না দাঁড়ালে স্বাস্থ্যসেবা পুনর্গঠন করা সম্ভব নয়।

আইন উপদেষ্টা বলেন, একজন নার্স যদি ১২ হাজার টাকা বেতন পান, তাহলে তিনি কীভাবে মেজাজ ঠিক রেখে ভালো সেবা দেবেন? বেতন কম পাওয়ার ফলেই তারা এমন খারাপ আচরণ করেন। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালে তার বাসার কাজের লোকও নার্সদের সমান বেতন ও সুযোগসুবিধা পেতেন। আমি হাসপাতালের মালিকদের বলব, তারা যেন নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও ভালো বেতন দেন। অনেক মালিকের কোটি টাকার বাগানবাড়ি থাকলেও তারা কর্মীদের সামান্য বেতন বাড়ান না। মুনাফা থেকে ১০ ভাগ টাকা কর্মীদের পেছনে খরচ করলেও হাসপাতালের সেবার মান অনেক উন্নত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিপিএইচসিডিওএর সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশকারীরা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয় : সালাহউদ্দিন
পরবর্তী নিবন্ধবাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ বজ্রপাত, পিতার সামনে সন্তানের মৃত্যু