অবশেষে ছাড় হলো বঙ্গবন্ধু টানেল ছয় লেন সংযোগ সড়ক প্রকল্পের ক্ষতিপূরণের পুরো অর্থ। দ্বিতীয় কিস্তির ২৮ কোটি টাকার সঙ্গে পূর্বের ৮৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা মিলিয়ে এই প্রকল্পে বাকি থাকা মোট ১১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ পেল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। এর মাধ্যমে স্বস্তি ফিরেছে অধিগ্রহণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোতে।
এদিকে ক্ষতিপূরণের টাকা বিলম্বিত হওয়ায় অনেক স্থানে উচ্ছেদ ও অধিগ্রহণ করা যায়নি। টাকা ছাড়ের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজে আবারও গতি ফিরবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ১২ মার্চ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের বরাবরে ক্ষতিপূরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। যার ফলে ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানা গেছে। ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ক্ষতিপূরণের প্রথম কিস্তির টাকা ৮৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু পুরোটা বরাদ্দ না হওয়ায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বরাবর অর্থ ছাড় করা হয়নি। সওজ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে সওজের প্রেরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয় ছয় লেন প্রকল্পটির সংশোধিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে অংশভিত্তিক অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১১৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হতে যাচ্ছে প্রকল্পের মেয়াদ।
২০২০ সালের ১৬ জুন বঙ্গবন্ধু টানেল সংযোগ সড়ক প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর সংশোধিত প্রকল্প অনুযায়ী অধিগ্রহণের ৮.৮৩ একর বা ৩.১৮ হেক্টর জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ চূড়ান্ত মূল্য হিসেবে ২৭ কোটি ৯৮ লাখ ৯৩ হাজার ২১২ টাকা পরিশোধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ অনুমোদিত হয়। ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণের ১১৪ কোটি দুই ধাপে ছাড় করা হয়। ক্ষতিপূরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে চিঠিতে অনুরোধ করা হয়।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বঙ্গবন্ধু টানেল ছয় লেন সংযোগ সড়ক প্রকল্পের পরিচালক সুমন সিংহ জানান, ইতিমধ্যে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের ১ম কিস্তি ৮৬ কোটি ৫০ লাখ আর দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ২৮ কোটি টাকা অনুমোদনের পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা প্রেরণ ও অধিগ্রহণকৃত ভূমি বুঝিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মহোদয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদানে এখন আর কোনো বাধা নেই। আমরা আশা করছি অতি শীঘ্রই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধিগ্রহণের টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের প্রদানে উদ্যোগ নেবেন।
তিনি আরো জানান, ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদানের সাথে সাথে অধিগ্রহণের ভূমি বুঝে নিয়ে এবং সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ বঙ্গবন্ধু টানেল সংযোগ সড়কের ছয় লেন প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ শেষ করা হবে। প্রকল্পের ডিপিপি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। প্রকল্পের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।