অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইটা ত্রিমুখি

সিজেকেএস নির্বাচন

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ২২ নভেম্বর, ২০২৩ at ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ হচ্ছে অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক। এই একটি পদের জন্য লড়াই করছেন তিনজন। আর এই তিনজনই চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে বেশ পরিচিত মুখ এবং জনপ্রিয় মুখ। দীর্ঘ দিন ধরে তিন জনই চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে রয়েছেন। এই তিনজন হলেন বর্তমান অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী এবং সাবেক অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম শহীদুল ইসলাম। তিনজনই চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিভিন্ন পদে রয়েছেন দীর্ঘ দিন ধরে। এই তিন জনই যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। চেষ্টা করছেন ভোটারদের মন জয় করার। একজন ক্রীড়াবিদ বা ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে তাদের রয়েছে বেশ খ্যাতি। এস এম শহীদুল ইসলাম ক্রীড়াবিদ থেকে হয়েছেন ক্রীড়া সংগঠক। একজন ফুটবলার হিসেবে খেলেছেন প্রায় এক যুগেরও বেশি। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ছিলেন ফুটবলার। খেলেছেন রাইজিং স্টার ক্লাব, ফায়ার সার্ভিস, হাফিজ জুট মিলস এবং বিসিআইসির পক্ষে। পরে বিসিআইসিতে চাকুরি করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দলের হয়েও খেলেছেন তিনি। খেলা ছাড়ার আগেই ১৯৮৭ সালে অছি ক্লাবের হয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় প্রথম কাউন্সিলর হয়ে আসেন। অবশ্য তার আগে ১৯৮৪ সাল থেকে শতাব্দী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে অবশ্য শতাব্দী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কাউন্সিলর হন। ১৯৯৬ সাল থেকে ছিলেন বিসিআইসি ক্রীড়া সংসদের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রথম জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নির্বাহি সদস্য নির্বাচিত হন। পরের নির্বাচনেও হন নির্বাহি সদস্য। এরপর ২০০৩ সালের নির্বাচনে হন যুগ্ম সম্পাদক। ২০০৮ সালের নির্বাচনে হন অতিরিক্ত সাধারন সম্পাদক। এরপরের নির্বাচনে হেরে যান। কিন্তু এর পরের দুই নির্বাচনে সমঝোতার প্যানেল হলে তিনি ছিলেননা সে দুই কমিটিতে। তবে ২০২০ সালে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পান। এখনো সে পদে রয়েছেন। প্রায় একযুগ পর আবার জেলা ক্রীড়া সংস্থার গুরুত্বপূর্ন এই পদে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। মশিউর রহমান চৌধুরীও ক্রীড়াবিদ থেকে ক্রীড়া সংগঠক। যদিও তিনি একজন রাজনীতিবিদও। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ফুটবল খেলেছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং মোহাডোন ব্লুজের পক্ষে। খেলেছেন কলেজ দলের হয়েও। ১৯৮২ সালে খেলা ছাড়লেও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থায় এসেছেন ২০১০ সালে। আর প্রথমবারেই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর হয়ে এসে নির্বাহি সদস্য নির্বাচিত হন ২০১১ সালে। পরের নির্বাচন হয় ২০১৫ সারে। সেবারেও তিনি নির্বাচিত হন নির্বাহি সদস্য হিসেবে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে যুগ্ম সম্পাদক হন মশিউর রহমান। এবার আরো এগিয়ে যেতে চাইছেন। আর সে লক্ষ্যেই অতিরিক্ত সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। মাঠে তার দল যেমন দুর্দান্ত খেলে তেমনি কমিটিতেও বেশ ভাল ভুমিকা রাখতে চান মশিউর। আর সে কথাটাই তিনি বলার চেষ্টা করছেন ভোটারদের। জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নানা দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাংলাদেশ তায়কোয়ান্ডো ফেডারেশনেও দায়িত্ব পালন করছেন সহ সভাপতি হিসেবে। ছিলেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের নির্বাহি সদস্যও। এজিএসের মত গুরুত্বপূর্ন পদে নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন মশিউর।

এই পদে অপর যে প্রার্থী লড়ছেন তিনি হলেন সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম। যিনি ক্রীড়াবিদ না হলেও একজন সংগঠক হিসেবে চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে জাতীয় পর্যায়ে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও খ্যাতি অর্জণ করেছেন। ছাত্র জীবন থেকেই নানা সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন শামীম। তবে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থায় আসেন ১৯৯৬ সালে। তখণ মোহামেডান বেশ শক্তিধর একটি দল চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে। কাউন্সিলর হিসেবে এসেই নির্বাচিত হন নির্বাহি সদস্য। পরের মেয়াদেও নির্বাচিত হন নির্বাহি সদস্য। তবে সেবার কোষাধ্যক্ষ ছিলেন একরামুল করিম চৌধুরী। কিন্তু তিনি সময় দিতে না পারায় সে মেয়াদের বলতে গেলে পুরো সময় কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন শামীম। ২০১১ সালে রেলওয়ে রেঞ্জার্সের প্রতিনিধি হয়ে আসেন সিজেকেএসএ। সে নির্বাচনে অতিরিক্ত সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরের দুই মেয়াদেতো নির্বাচন হয়নি। সমঝোতা হয়েছে। আর সে সমঝোতায়ও অতিরিক্ত সাধারন সম্পাদক ছিলেন তিনি। হ্যাটট্রিকের পর এবার টানা চতুর্থবার এজিএস নির্বাচিত হওয়ার প্রত্যাশা শামীমের। জেলার গন্ডি পেরিয়ে ২০১২ সালে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সিনিয়র সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে পালন করেন দাবা ফেডারেশনের সভাপদির দায়িত্ব। এরপর ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত পালন করে যাচ্ছেন দাবা ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব। মুলত দেশের দাবা গতি পেয়েছে তার আমলেই। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব দাবা সংস্থার এশিয়া জোনের সভাপতি হয়েছেন দুইবার। যা বাংলাদেশে কোন ক্রীড়া সংগটকের জণ্য প্রথম। মোহামেডানের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে আছেন শামীম। নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন করাটাই তার লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন শামীম। এই পদের তিনজন প্রার্থীই দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং পরিচিত। তাই লড়াইটা যে এখানে সেয়ানে সেয়ানে হবে সেটা নিশ্চিত। এ জায়গায় ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বেশ বেগ পেতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআবার জাতীয় দলে ফিরলেন নাফিস ইকবাল
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ৫.৫১ কোটি টাকা