চট্টগ্রামে স্কুলে পুনঃভর্তি ফি এবং ভর্তির সময় অতিরিক্ত টাকা নেওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) বাতিল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। গতকাল দুপুরে সংস্কার পরবর্তী নগরীর ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি নতুন বছরের প্রথম দিনে বিতরণ করা বইয়ের নিম্নমান ও বিভিন্ন ভুল-ত্রুটির বিষয়েও কথা বলেছেন।
উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, এবার অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হয়েছে। মেল্ডের (কাগজ তৈরির মন্ড) দাম বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। জাতীয় স্বার্থে লোডশেডিং করতে হয়েছে। ফলে কিছু কিছু জায়গায় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়। ফলে ছাপার মানের কারণে কিছু ভুল বা ‘প্রিন্টিং মিসটেক’ থাকতে পারে। সেগুলো পরে ঠিক করা যাবে। তবে আপনারা জানেন, আমরা নতুন কারিকুলামে (পাঠ্যক্রম) যাচ্ছি। আগামী বছরে নতুন পাঠ্যক্রম অনুসারে বই এসে যাবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী কারিকুলাম আমরা করেছি। আশা করি সেই কারিকুলাম অনুসারে উন্নত টেঙট বুক দিতে পারব।
ভর্তিতে বেপরোয়া ও অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে উপমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন, দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে ৮০০ সরকারি স্কুল। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যারা এমপিওপ্রাপ্ত, তারা সরকারি সহযোগিতা পায়। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এমপিওর টাকা পান। এছাড়া অন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েই তাদের প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন বছরের ভর্তিতে কত টাকা নিতে পারবে তা আমরা নির্ধারণ করে দিই। নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি টাকা নেওয়া যাবে না। পুনঃভর্তির নামে ফি নেওয়া যাবে না। যেসব প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে বা নিচ্ছে তাদের তালিকা মন্ত্রণালয় থেকে করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এমপিও পায় তাদের এমপিও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
‘গতকাল আমরা অভিযোগ পেয়েছি, কিছু প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেওয়া হয়নি। কারণ ওই শিক্ষার্থীদের নাকি ফিস বাকি ছিল। ফিসের সাথে বইয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। বই সরকার দেয়। বই থেকে শিশুদের বঞ্চিত করা, এটা মেনে নেওয়া হবে না। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সুযোগ বন্ধ করে দেব।
এ সময় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোস্তফা কামরুল আখতার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, সরকারি মুসলিম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মমতাজ আকতারসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।