নগরীর ফিরোজশাহর ১নং ঝিল (পাহাড়) এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এ সময় পাহাড়ের পাদদেশে অতি ঝুঁকিপূর্ণভাবে গড়ে উঠা ১৮০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
এ সব স্থাপনায় আড়াইশ পরিবারের প্রায় বারোশ’র মতো মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। গতকাল রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন, মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাব, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষে তদারকিতে ছিলেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম। কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক, আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল আমিন সরকার ও চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানার নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।
সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মোট পাঁচটি জোনে ভাগ হয়ে অভিযান চালানো হয়। যেখানে প্রায় দেড়শ শ্রমিক কাজ করেন। কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এ ধরনের কিছুই হয়নি। বরং অভিযানের কথা শুনে অনেকে নিজ উদ্যোগে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন। এ দিকে গতকাল দুপুরের দিকে ১ নং ঝিল এলাকায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান। উচ্ছেদ অভিযান সম্পর্কে এ সময় তিনি বলেন, পাহাড়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ যেসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে সেসব জায়গায় পুনরায় কেউ যাতে দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে সে জন্য কাটা তার দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে গাছ লাগানো হবে। যদি কেউ এ সীমানা ভেঙে বা গাছগুলো কেটে বসতি গড়ে তুলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাহাড় সংশ্লিষ্টদের কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা সিটি কর্পোরেশন এবং রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকেও বলেছি, তাদের আওতাধীন পাহাড়ি জায়গায় নির্মিত অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে সেখানে কাটা তারের বেড়া ও গাছ লাগিয়ে সংরক্ষণ করতে। পাহাড়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (এনডিসি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এতে কারো মৃত্যু হোক তা আমরা চাই না। আমরা চাই পাহাড়ে যেসব বসতি রয়েছে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাক। এ জন্য মাইকিংসহ নানাভাবে তাদেরকে আমরা বুঝাচ্ছি। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আবার অনেকে আত্মীয় স্বজনদের কাছে চলে গেছেন। তিনি আরো বলেন, গত শনিবার প্রায় তিনশ’র মতো মানুষ পাহাড় ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে থেকেছেন। আজকেও (গতকাল) একই সংখ্যক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।
উল্লেখ্য, ভারী বর্ষণ শুরু হলে গত শুক্রবার রাতে ফিরোজশাহর ১ নং ঝিল এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে ৪ চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় বেশ কয়েকজন।