অক্টোবরে দুর্ঘটনায় ৫৭৫ মৃত্যু

অর্ধেকই সড়কে গাড়ি চাপায় । দুর্ঘটনার ৩৮ শতাংশের বেশি মহাসড়কে । মোটরসাইকেলের সংখ্যা কমিয়ে আনার পরামর্শ

| রবিবার , ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

সারা দেশে গত অক্টোবর মাসে সড়ক, রেল ও নৌ পথে ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় ৫৭৫ জন মারা গেছেন। এছাড়া ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন বলে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গতকাল শনিবার বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, এসব দুর্ঘটনার অর্ধেকই গাড়ি চাপা দেওয়া, এক চতুর্থাংশ সংঘর্ষ ও ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারানোজনিত কারণে হয়েছে। দুর্ঘটনার ৩৮ শতাংশের বেশি হয়েছে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে। আগের মাস অর্থাৎ গত সেপ্টেম্বরে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৫৪৭টি দুর্ঘটনায় ৫৫৪ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩৮ জন আহত হয়েছিলেন। আগের মাসের চেয়ে দুর্ঘটনার হার ও আহতের সংখ্যা কমে এলেও অক্টোবরে বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। খবর বিডিনিউজের।

সংস্থার মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছেন, সরকার বদলের পরে সব পথের ট্রাফিক পুলিশের প্রয়োজনের চেয়ে কম উপস্থিত থাকার সুযোগে আইন লংঘন করে যানবাহন চলেছে বেশি করে। মূল সড়কেও অবৈধ যানবাহনের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় মৃত্যুর হার বেড়েছে। অবৈধ গাড়িগুলো ছোট হলেও একেকটিতে ৭ থেকে ৯ জন পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করে। দুর্ঘটনার সংখ্যা ও মৃতের হার কামিয়ে আনতে অতি দ্রুত মোটরসাইকেলের সংখ্যা কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, সারা দেশে ৫০ লাখের বেশি মোটরসাইকেল রয়েছে। এত সংখ্যক মোটরসাইকেল চলাচলের সড়ক নেই আমাদের। অন্যান্য দেশের আয়তনের তুলনায়ও তা অনেক বেশি। আর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শুধু গ্রামে চলাচলের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।

নিহতের ৩৪ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার, সংখ্যায় তা ১৬৩ জন। এছাড়া রেলপথে ৬৩ দুর্ঘটনায় ৭৬ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৌ পথে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ৩৬ জন আহত এবং এখনো ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এসব দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত ৬৩১টি যানবাহনের মধ্যে ২৪ দশমিক ৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ ট্রাকপিকআপকাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ বাস, ১৭ দশমিক ৯১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ স্থানীয় পরিবহন নছিমনকরিমনমাহিন্দ্রাট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬ শতাংশ কারজিপমাইক্রোবাসের পরিচয় পাওয়া গেছে।

দুর্ঘটনার কারণ : সংস্থাটির মতে, সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকা। অতি বৃষ্টিতে সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে। জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকরা এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পড়েছেন।

উল্টোপথে চলাচল, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং অতিরিক্ত সময় ধরে চালকের আসনে একজন থাকায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কমছে না। ধীর ও দ্রুতগতির বাহনের জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা করতে সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপারকিতে ছিনতাই করে পালানোর সময় আটক ১
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় লরির ধাক্কায় প্রাণ গেল দুই বাইক আরোহীর