এখন শরৎকাল। বৃষ্টির প্রবণতা কমে নীল আকাশে ভেসে বেড়ানোর কথা সাদা–কালো মেঘের ভেলা। কিন্তু সারাদেশেই কম বেশি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে কয়েকদিন ধরে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, নভেম্বর–ডিসেম্বরেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং আসছে শীতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অক্টোবরের এই বৃষ্টির মূল কারণ হলো মাসের শুরুতে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপ। কিন্তু নিম্নচাপ বা এর প্রভাব শেষ হওয়ার পরেও বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই কেন –এমন প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেছেন, গত পাঁচ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে অক্টোবরের এই বৃষ্টিকে অস্বাভাবিক বলা যাবে না। বরং এবার নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসেও কিছুটা বৃষ্টিপাত হতে পারে। সিনিয়র আবহাওয়াবিদদের একজন বজলুর রশীদও বলছেন, অক্টোবর মাসের এ সময়টায় প্রতি বছর কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়ে আসছে। মনে রাখতে হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরেও কিন্তু ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছিল। চলতি মাসের শুরু থেকে প্রতিদিনই কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। তবে সামনের কয়েকদিনের মধ্যে আকাশ আবার রৌদ্রোজ্জ্বল হয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণের আর্দ্রতা আর পশ্চিমের (ভারতের দিক থেকে আসা) গরম বাতাসের সংমিশ্রণে গত কিছুদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। বজলুর রশীদ বলছেন, ‘অক্টোবরের মাঝামাঝিতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে। কারণ বাতাস তখন উত্তরে শুষ্ক অঞ্চল থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হবে। এর প্রভাবে আর্দ্রতা কিছু কমবে, যার ফলে বৃষ্টিপাতও কমে আসবে।’
তবে সমুদ্রে লা নিনার (যখন পূর্ব–পশ্চিম বাতাস আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং যা উষ্ণ জলরাশিকে আরও পশ্চিমে ঠেলে দেয়) প্রভাবে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানিয়েছেন। তার মতে, ডিসেম্বরে বৃষ্টির পূর্বাভাস ঠিক থাকলে এবারের শীতকালটাও অন্য রকম হতে পারে, অর্থাৎ শীত আসতে বিলম্ব হতে পারে কিংবা শীতের সময়কালটাও কম হতে পারে।
আগামীকাল সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবারও একই ধরনের পরিস্থিতি থাকার সম্ভাবনার কথা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। আগামী ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত একই পরিস্থিতি থাকার পর দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।