ইউক্রেনে বাংলার সমৃদ্ধিতে গোলায় প্রকৌশলী নিহত (ভিডিও দেখুন)

আজাদী অনলাইন | বৃহস্পতিবার , ৩ মার্চ, ২০২২ at ১২:২৬ পূর্বাহ্ণ

ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশী জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধিতে গোলার আঘাতে আগুন ধরে গেছে, নিহত হয়েছেন একজন প্রকৌশলী।

নিহত প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার।

বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমডোর সুমন মাহমুদ সাব্বির বুধবার মধ্যরাতে বলেন, “ওই জাহাজে একটা শেল হিট করেছে। সেটা ব্রিজেই বিস্ফোরিত হয়। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা গেছেন। জাহাজের বাকি ২৮ জন অক্ষত আছেন। আগুন নেভানো হয়েছে।“

জাহাজে খাবারসহ অন্যান্য রসদ পর্যাপ্ত রয়েছে এবং কোনো ঘাটতি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে।”

জাহাজে থাকা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ফয়সাল আহমেদ সেতুর বাবা ফারুক আহমেদ বলেন, “ওরা সবাই ভালো আছে। সেতুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। হামলার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিএসসি’র কর্মকর্তারা তাদের খোঁজ নিচ্ছেন।”

এর আগে বিএসসি’র মহাব্যবস্থাপক (চার্টার্ড) ক্যাপ্টেন মুজিবুর রহমান বুধবার রাত ১১টার দিকে বলেন, “ওলভিয়া বন্দরে থাকা আমাদের জাহাজটি আক্রান্ত হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা থেকে সোয়া ১০টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি।”

হামলা ও প্রকৌশলীর মৃত্যুর বিষয়ে বাংলার সমৃদ্ধিতে অবস্থান করা নাবিক আতিকুর রহমান মুন্না তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “জাহাজে রকেট হামলা হয়েছে। একজন মারা গেছেন।”

এ বিষয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রকেট হামলায় জাহাজের একজন প্রকৌশলীর মৃত্যুর খবর তারা পেয়েছেন।

কুর্দস গ্লোবাল নামের একটি ফেসবুক পেজে আসা ভিডিওতে একটি জাহাজে বিস্ফোরণ ও আগুন ধরে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।

ইউক্রেনের সমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষের বরাতে ওই ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, একটি রকেট আঘাত হানার পর ৩৬৩ নম্বর অ্যাঙ্করেজে থাকা বাংলার সমৃদ্ধিতে আগুন ধরে যায়। পরে বন্দর থেকে দু’টি টাগবোট পাঠানো হয় সেখানে।

সাদ বিন মোস্তফা নামের এক নাবিকের ফেসবুক পোস্টে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে জাহাজটির নাবিকদের আগুন নেভানোর প্রাণপণ চেষ্টা করতে দেখা যায়।

বাংলাদেশের পতাকাবাহী ও রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বিএসসি’র জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর আগে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে গিয়েছিল। ওই জাহাজে ২৯ বাংলাদেশী নাবিক ছিলেন।

যুদ্ধ শুরু হলে সাধারণ পণ্যবাহী (বাল্ক ক্যারিয়ার) জাহাজটি ওই বন্দরে আটকা পড়ে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএসসি’র মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “চ্যানেল ক্লিয়ার হলে দু’দিনের মধ্যেই সেটি যাত্রা শুরু করতে পারবে।”

আর ইউক্রেনের বন্দর থেকে জাহাজটির পণ্য তোলার কথা থাকলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

ওই দিন পর্যন্ত জাহাজটি সেখানে নিরাপদে নোঙ্গর করে ছিল। সব নাবিক সুস্থ ও নিরাপদ ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, “জাহাজটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার ও পানি রয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি এমভি বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের ওই বন্দরে পৌঁছায়। তুরস্কের এরেগলি বন্দর থেকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি খালি অবস্থায় সেটি ওলভিয়া বন্দরে যায়।”

যুদ্ধের কারণে বর্তমানে ওই বন্দরের দৈনন্দিন কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসসি’র কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় যুবলীগ নেতাকে কোপাল দুর্বৃত্তরা
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬