কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির থেকে ‘মানব পাচারকারী’ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বাংলাদেশী পাঁচ নাগরিককে মিয়ানমারে জিম্মি রেখে তারা মুক্তিপণ দাবি করছিল বলে জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেফতাররা হলো উখিয়া উপজেলার শফিউল্লাহকাটা ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৩ ব্লকের বাসিন্দা প্রয়াত দিল মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ ছাবের (২৬) ও একই এলাকার কেফায়েত উল্লাহর মেয়ে আরাফা বেগম (৩৭) এবং উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের গয়ালমারা এলাকার মোহাম্মদ আলীমের ছেলে মোহাম্মদ শারমিন (২৫)।
রবিবার রাতে আশ্রয় শিবিরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানান র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “পেকুয়া উপজেলার হোসাইনাবাদ এলাকার মো. হেলাল উদ্দিনসহ পাঁচজনকে মিয়ানমারে পাচারের অভিযোগ রয়েছে গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে।”
সোমবার র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাচারের শিকার হেলাল উদ্দিন একজন কৃষক। তিনি পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানের বরজে কাজ করতেন। সেই কাজ করতে গিয়েই তার সঙ্গে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যদের পরিচয় হয়।
হেলালসহ পেকুয়ার আরও কয়েক যুবককে উন্নত জীবন ও উচ্চ বেতনে মালয়েশিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখায় চক্রটি। এমনকি মালয়েশিয়ায় পৌঁছে চুক্তির টাকা পরিশোধেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এক পর্যায়ে ৮ অক্টোবর ভোরে ট্রলারে করে হেলালসহ পাঁচজনকে নিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয় পাচারকারী চক্রটি। পরে তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের গ্রেফতারদের কাছে পাওয়া তথ্যের বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “ট্রলারে করে সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় ওই পাঁচজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দেশে ফিরতে কাকুতি-মিনতি করলে পাচারকারীরা তাদের মিয়ানমারে নিয়ে জিম্মি করে রাখে। তারপর পাচারকারী চক্রটি মোবাইল ফোনে ভুক্তভোগীদের স্বজনদের কাছে জনপ্রতি দুই লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে।”
এক পর্যায়ে যোগাযোগ মাধ্যম ইমোতে মারধরের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে ভুক্তভোগীদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “সোমবার দুপুরে গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মামলা করে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।”