পাওয়া গেছে সাবমেরিন টাইটানের ধ্বংসাবশেষ

পাঁচ অভিযাত্রীর প্রাণহানির কথা জানাল ওশানগেট

আজাদী অনলাইন | শুক্রবার , ২৩ জুন, ২০২৩ at ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে এই জলযানের বাইরের আবরণের অংশ শনাক্ত হয়েছে।

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড এর আগে নিশ্চিত করে যে অনুসন্ধান এলাকার মধ্যে একটি ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র পাওয়া গেছে।

পানির তলদেশে অনুসন্ধান চালানো দূর নিয়ন্ত্রিত একটি যান টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের পাশেই নিখোঁজ সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করে।

ধ্বংসাবশেষের সন্ধানের খবর পাওয়ার পর এক বিবৃতিতে সাবমেরিনটির মালিক বেসরকারি কোম্পানি ওশানগেট এক্সপিডিশন্স বলেছে, এখন আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সিইও স্টকটন রাশ, শাহজাদা দাউদ, তার ছেলে সুলেমান দাউদ, হ্যামিশ হার্ডিং ও পল হেনরি নারজিওলেটকে আমরা দুঃখজনকভাবে হারিয়েছি।

বিস্তারিত তথ্য জানাতে স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে (১৯০০ জিএমটি) যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।

ডাইভ এক্সপার্ট এবং উদ্ধার গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত এক্সপ্লোরার ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মিয়ার্নস বিবিসিকে বলেন, “ধ্বংসাবশেষের মধ্যে সাবমেরিনটির একটি অবতরণ ফ্রেম এবং পেছনের কভার (আবরণ) রয়েছে।”

গত রবিবার (১৮ জুন) উত্তর আটলান্টিকে নিখোঁজ হয় সাবমেরিন টাইটান। এটাতে চড়ে পাঁচ ক্র্যু টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েছিলেন। সাবমেরিনটিতে চার দিনের অক্সিজেন মজুত ছিল।

কিছু বিশেষজ্ঞের অনুমান যে, বহিঃঅবকাঠামোগত ব্যর্থতার কারণে এটি বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের শিকার হতে পারে।

মিনিভ্যান-আকারের ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিনটির মালিকানা বেসরকারি কোম্পানি ওশানগেট এক্সপিডিশন্সের। কোম্পানিটি এই সাবমেরিন পরিচালনা করেছিল।

ওশানগেট এক্সপিডিশন্সের সহ প্রতিষ্ঠাতা গুইলারমো সোহনলিন বিবিসিকে জানান, তিনি বিশ্বাস করেন সাবমেরিনটিতে একটি তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে।

উত্তর আটলান্টিকে ডুবে যাওয়া টাইটানিকের অবশিষ্ট অংশ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সাবমেরিনটি। এই সাবমেরিনে পাঁচ যাত্রী ছিলেন।

২১ ফুট লম্বা সাবমেরিনটি নিয়ে বেরিয়েছিলেন তারা। রবিবার যাত্রা শুরুর ঘণ্টা দুয়েক পর থেকেই তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সাবমেরিনের খোঁজে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো হয়।

সাগরের প্রায় ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে সাবমেরিনটির অনুসন্ধান চালানো হয়। এই অঞ্চলের আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট রাজ্যের আয়তনের দ্বিগুণ। অঞ্চলটি ঝড়প্রবণ এবং দৃশ্যমানতা বেশ দুর্বল হওয়ায় অনুসন্ধান অভিযান চালানো ছিল বেশি চ্যালেঞ্জিং।

ওই সাবমেরিনে থাকা পাঁচ যাত্রীর পরিচয় প্রকাশ করেছে বিবিসি। তারা হলেন হ্যামিশ হার্ডিং, শাহজাদা দাউদ, সুলেমান দাউদ, পল হেনরি নারজিওলেট ও স্টকটন রাশ।

ওশানগেট বলেছে, এই ব্যক্তিরা সত্যিকারের অভিযাত্রী, যারা সাহসিকতার একটি স্বতন্ত্র চেতনা এবং বিশ্বের মহাসাগরগুলো অন্বেষণ এবং রক্ষা করার জন্য গভীর আবেগ ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন।

আমাদের হৃদয় এই দুঃসময়ে এই পাঁচ আত্মা এবং তাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে রয়েছে। যারা জীবন হারিয়েছেন তাদের পরিচিতজনদের জন্যও আমরা শোকাহত।

১৯১২ সালে উত্তর আটলান্টিক সাগরে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক। প্রায় ১৩ হাজার ফুট সমুদ্রের গভীরে চলে যায় এই বিশাল জাহাজ। কানাডার নিউ ফাউন্ডল্যান্ড উপকূল থেকে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দূরে টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীর ওসি প্রত্যাহার!
পরবর্তী নিবন্ধকাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বেড়েছে