টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক হুমকির মুখে

টেকনাফ প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৪ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:২২ অপরাহ্ণ

ভারী বৃষ্টি ও সাগরের জোয়ারের প্রভাবে সাগরের পানির তোড়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের আশপাশের জিও ব্যাগগুলো ফেটে পড়ছে। এতে মাটি সরে মূল পার্কে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

ইতিমধ্যে এর পার্কে যাওয়ার মূল সড়কে ভাঙন ধরেছে। নতুন করে ৩ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভে কমপক্ষে ১০ স্পটে এই ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে সাবরাং ট্যুরিজম পার্কেও ব্যাপক ভাঙনের আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, “সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের দক্ষিণ ও উত্তর পাশে এখন থেকে পরিকল্পিত রক্ষা বাঁধ জরুরি হয়ে পড়েছে। না হয় সাগরের প্রবল স্রোতের তোড়ে ব্যাপক ভাঙনের কবলে পড়বে পার্কটি।”

বঙ্গোপসাগরের ঢেউ আর বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত ঘেঁষে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের সাবরাংয়ে ট্যুরিজম পার্কের কাজ শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের পাশে এই ট্যুরিজম পার্কটি ১ হাজার ৪৭ একর জমির উপর থাইল্যান্ডের পাতায়ার সৈকতের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে। পার্কটির চলমান কাজ শেষ হলে প্রতিদিন সেখানে ৪০ হাজার পর্যটক যাতায়াত করতে পারবেন। সাবরাং পর্যটন অঞ্চল চালু হলে মাত্র আধা ঘণ্টায় যাওয়া যাবে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে।

সমুদ্রসৈকত দেখার পর পর্যটকরা সাবরাং পর্যটন অঞ্চল ও সেন্টমার্টিন অল্প সময়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। কক্সবাজারের কলাতলী থেকে টেকনাফের যেখানে মেরিন ড্রাইভ শেষ হয়েছে তার পাশের জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে সাবরাং পর্যটন অঞ্চল।

সাবরাং পর্যটন অঞ্চল হবে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা পর্যটন অঞ্চল। বিনিয়োগ হবে কয়েক হাজার কোটি টাকা। সেখানে থাকবে পরিবেশবান্ধব শহর, সুন্দরবনের থিম পার্ক ও নাইট সাফারি, রয়্যাল ক্যাসিনো, গলফ ক্লাব, অ্যাকোয়ারিয়াম, জাদুঘর, হেরিটেজ পার্ক, শপিং মল, রেস্টুরেন্ট, ক্লাবসহ অন্যান্য সুবিধা। এছাড়া থাকছে ১০০ শয্যার হাসপাতাল এবং একটি স্কুলও।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনটি তারকা হোটেল নির্মাণকাজ শুরুর মধ্য দিয়ে সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় কিন্তু এখনো সেই আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই রয়েছে প্রকল্প।

গ্রেট আউটডোর এন্ড অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেড, গ্রিন অরচার্ড হোটেল এন্ড রিসোর্টস লিমিটেড এবং সানসেট বে লিমিটেড নামের তিনটি প্রতিষ্ঠান ৫ দশমিক ৫ একর জমিতে ৩২ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫৭ কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে পাঁচ তারকা ও তিন তারকা মানের হোটেলসহ পর্যটনবান্ধব বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের এই কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে ।

এছাড়া ৯টি পর্যটনবান্ধব প্রতিষ্ঠানের আরো ২১২ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার কথা রয়েছে।

এই বিনিয়োগকারীর তালিকায় নেদারল্যান্ডস ও সিঙ্গাপুরের দু’টি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। পাতায়ার আদলেই হচ্ছে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক। আর এখানে প্রতিদিন যাতায়াত করতে পারবে ৪০ হাজার পর্যটক। বর্তমানে এই পর্যটন অঞ্চলের প্রশাসনিক ভবন ও ভূমি উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা বাঁধ, সেতু-কালভার্ট তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে।

সম্প্রতি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের ভূমি উন্নয়ন বাবদ ১৮০ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ২৪৮ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটাইগারপাসে পাহাড় ধসে পড়ল মাইক্রোবাসের উপর
পরবর্তী নিবন্ধ৩৫ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ পেল দোহাজারীর ১৯ হাজার গ্রাহক