কক্সবাজারের টেকনাফে অপহৃত তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করে অপহরণ ও মানবপাচারকারী চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়ারা হলেন উখিয়া ১৩নং ক্যাম্পের সোনা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হাসান (১৪), মোহাম্মদ তাহেরের ছেলে আনিসুর রহমান (১৩) ও মো. ইলিয়াসের ছেলে সৈয়দ নুর (১২)।
শুক্রবার (৭ জুলাই) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে টেকনাফের লম্বরী পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
কক্সবাজার ৮ এপিবিএন-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, “গত ২ জুলাই একটি অপরাধী চক্র টেকনাফে গাছ থেকে সুপারি পাড়া ও গাড়িতে তোলা কাজের প্রলোভন দেখিয়ে উখিয়া ১৩ নম্বর ক্যাম্প থেকে উদ্ধারদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তাদের অবৈধভাবে আটকে রেখে তাদের অভিভাবকদের নিকট মোটা অংকের টাকা দাবি করে। পরে ৬ জুলাই অপরাধী চক্র একই কায়দায় এফডিএমএন ১৩ নম্বর ক্যাম্পের আশপাশের এলাকা থেকে আরও ৬ জন এবং ১৩ নম্বর ক্যাম্পের ডি ২ ব্লকের ইলিয়াসের ছেলে সৈয়দ নূর (১২), নূর মোহাম্মদের ছেলে সৈয়দুল মোস্তফা (১১), ডি ১ ব্লকের জমির হোসেনের ছেলে ওসমান (১৩), বি ২ ব্লকের বশির আহম্মদের ছেলে হারেছ (১২), ১৯ নম্বর ক্যাম্পের সি ৪ ব্লকের মোহাম্মদুল্লাহ’র ছেলে কামাল মোস্তফা (১৪) ও বাংলাদেশী শমসু আলমের ছেলে রিমন (১৫) সহ মোট ৬ জন কিশোর ছেলেকে অপহরণ করে টেকনাফে নিয়ে যায়।”
তিনি আরো বলেন, “কক্সবাজার ৮ এপিবিএন-এর অধিনায়ক (এডিশনাল ডিআইজি) মো. আমির জাফর বিপিএম-এর নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (নি.) মো. রবিউল ইসলাম, এসআই (নি.) সঞ্জয় দত্ত সঙ্গীয় ফোর্স সহ বিভিন্ন উৎস ও স্থান গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৭ জুলাই টেকনাফে অভিযান চালিয়ে অপহৃত সৈয়দ নুর, মো. হাসান ও আনিসুর রহমানসহ ৩ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অভিযানে উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের দক্ষিণ লম্বরি এলাকার বিভিন্ন দুর্গম স্থানে অভিযান চালিয়ে অপহরণ চক্রের সদস্য টেকনাফের নুরুল আমিন (৩২), মো. ফয়সাল (১৮) শফিকুল (১৮), সাইফুল ইসলাম (২২), মিজানুর রহমান (১৮), আব্দুর রহমান (১৭), মোহাম্মদ পারভেজ (১৪), মো. মোবারক (১৭) এবং এফডিএমএন (রোহিঙ্গা) মো. আমিন(১৭)কে গ্রেফতার করা হয়।”
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা হতে সুপারির কাজ এবং অন্য কাজের প্রলোভনে দেখিয়ে টেকনাফ এলাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ লম্বরি এলাকায় সুপারি বাগানের ভিতরে নির্জন স্থানে বিশেষ কৌশলে আটক রাখে। পরে ভিকটিমদের চোরা পথে নৌকাযোগে মিয়ানমারের শামিলা এলাকায় প্রেরণ করে এবং আটক ব্যাক্তিদের পরিবারের নিকট সুকৌশলে বড় অংকের টাকা আদায় করে মুক্তি দেয়। অনেক সময় এই অপরাধ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে বলে জানান সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ।
গ্রেফতারদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও বিস্তৃত তদন্তের মাধ্যমে অপহৃত অন্যান্য ভিকটিমদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।