টেকনাফে বিজিবি-মাদক কারবারি সংঘর্ষে নিহত ১

৭ বিজিবি সদস্য সহ আহত ১৫

টেকনাফ প্রতিনিধি | বুধবার , ২ আগস্ট, ২০২৩ at ৮:২৬ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)এর সঙ্গে মাদক কারবারিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৭ বিজিবি সদস্য সহ অন্তত ১৫ জন। ২০ হাজারের বেশি ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী জাফর আলমকে।

আজ বুধবার (২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় বিজিবি সদস্যরা ইয়াবা উদ্ধারে গেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে টেকনাফের হ্নীলার ২৪ নম্বর লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো রফিক (৪৮)। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৭ জনকে আইওএম হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এসময় গুরুতর আহত বিজিবি সদস্য আবদুল মালেককে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে আইওএম হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, লেদা এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলমের ভাই জাফর আলমের বাড়িতে বিজিবি’র একটি দল অভিযান চালায়। এসময় ইয়াবাসহ এক ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় সংঘবদ্ধ মাদক কারবারিসহ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা বিজিবি’র উপর হামলা চালায়। বিজিবিও পাল্টা গুলি করে। এ ঘটনায় একজন নিহত সহ ৭ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ ২ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বিজিবি সদস্যরা চিহ্নিত মাদক কারবারি মো. জাফর আলমকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে। এসময় মাদক চোরাকারবারীদের সাথে বিজিবি’র গুলি বিনিময়ের ঘটনায় ৭ জন বিজিবি সদস্য গুরুতর আহত হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ বুধবার টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ লেদা বিওপি’র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল আনুমানিক বেলা ১২টার সময় চিহ্নিত মাদক কারবারি মো. জাফর আলমকে ২০ হাজারের বেশি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে টহলদল তাকে নিয়ে লেদা বাজার অতিক্রমকালে তার সহচরেরা মাইকিং করে তাদের আত্মীয়স্বজন দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে।

এ সময় জাফর আলমের ভগ্নিপতি ডাকাত হারুন তার দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহ বিজিবি ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় জনতার ওপর গুলিবর্ষণসহ হামলা করে এবং মাদক কারবারি জাফর আলমকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে। তখন বিজিবি টহলদল আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড গুলি করে এবং সন্ত্রাসীদের ছত্রভঙ্গ করে আসামী ও মাদকসহ বিওপিতে ফেরত আসে। সন্ত্রাসীদের হামলায় ৭ জন বিজিবি সদস্য গুরুতর আহত হয় যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের সবাইকেই হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের নির্বিচার গুলিতে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি হতাহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তাদের আঘাতের বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনায় ছররা গুলি বা দেশীয় বন্দুকের আঘাত বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মাণ হয়।

উল্লেখ্য, চিহ্নিত মাদক কারবারি মো. জাফর আলমকে (বাংলাদেশী নাগরিক) জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটসহ নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর এবং উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত জ্ঞাত ও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতারসহ ৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে নিয়ে যাচ্ছিল ট্রাকটি
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফে ৪০ দিনের শিশুসহ মায়ের খালে ঝাঁপ