সিত্রাংয়ের প্রভাবে পানি বাড়ছে সেন্টমার্টিনে

ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে

টেকনাফ প্রতিনিধি | সোমবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:৫৭ অপরাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিনে।

আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮টার পর থেকে দ্বীপের চারপাশে সাগরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই এলাকার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে।

এ সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, “দুপুরে প্রবল ঢেউ এবং দমকা হাওয়ার তোড়ে জেটি ঘাটে নোঙ্গর করা অন্তত ১৩টি নৌকা সাগরের পানির নিচে ডুবে যায়। এবার রাত বাড়ার সাথে সাথে বিশেষ করে রাত ৮টার পর থেকে দ্বীপের চারপাশে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জনসাধারণকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে হোয়াইক্যং বাজারের প্রীতম মার্কেটের পাশের দেওয়াল ভেঙে পার্শ্ববর্তী টিনশেড ঘরে ধসে পড়ে। এতে আতিকুর রহমান মোহসীন নামে এক ব্যক্তি আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হ্নীলা ইউনিয়নের নাটমোড়া পাড়া এলাকায় গাছ উপড়ে রাস্তায় পড়ে যানজটের সৃষ্টি হলে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা সংকেত নিয়ে মাইকিংরত সিপিপি (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) সদস্য ইলিয়াসের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবকরা তা দ্রুত রাস্তা থেকে সরিয়ে নিয়ে চলাচল উপযোগী করে তোলে।”

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, “ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে সেন্টমার্টিনে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, নোঙর করা নৌকা ডুবে যাওয়ার খবর রয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু জায়গায় গাছ উপড়ে গেছে। তবে এ পর্যন্ত প্রাণহানি বা বড় ধরনের দুর্যোগ বা দুর্ঘটনা ঘটেনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত প্রচার ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক মেডিকেল টিম।”

তাছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে, ঘূ‌র্ণিঝড়ের কবল হতে সাবধানতা অবলম্বনে ক্যাম্প এলাকায় ৮ এপিবিএন-এর কমান্ডিং অফিসার মো. আমির জাফর (বিপিএম)-এর নির্দেশনায় দিনব্যাপী ৮ এপিবিএন’র আওতাধীন ১১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে (এফডিএমএন) রোহিঙ্গাদের ঘূ‌র্ণিঝড়ের কবল থেকে নিরাপদে রাখতে প্রচারণা চালানো হয়।

ঘূ‌র্ণিঝড়ের ঝুঁকি থেকে সাবধানতা অবলম্বনে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্যাম্প এলাকায় জনসাধার‌ণের মাঝে মাইকিং করা হয়। সবাই‌কে স‌চেতন থাকার জন্য বি‌শেষভা‌বে অনু‌রোধ করা হয়। ঘূ‌র্ণিঝড়ের প্রকোপ বাড়লেও কোনো ঝুঁকি তৈরি হলে এফডিএমএন সদস্যদের নিরাপদ স্থানে (লার্নিং সেন্টার, মসজিদ-মাদ্রাসা, সিআইপি অফিস ও অন্যান্য স্থাপনা) আশ্রয় গ্রহণ করতে বলা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের উখিয়া ৮ এপিবিএন সহকারী পুলিশ সুপার (অপস্ এন্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ।

তিনি ঘূ‌র্ণিঝড়ের কবল থেকে এফডিএমএন সদস্যদের নিরাপদে রাখতে এপিবিএন তৎপর আছে বলেও জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: চট্টগ্রামে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কাল
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে পশ্চিম চাম্বলে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি