সাতকানিয়ায় প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় এক চালককে উদ্ধার করেছে দোহাজারী হাইওয়ে থানা পুলিশ। উদ্ধারকৃত কার চালকের নাম নুরুজ্জামান রিয়াজ (২৩)।
আজ সোমবার (১৫ মে) সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়াস্থ মৌলভীর দোকান এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
নুরুজ্জামান রিয়াজ ফেনীর সোনাগাজী এলাকার নুর আলমের পুত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো. মঈনউদ্দিন বলেন, “আজ সকালে আমি অটোরিকশা নিয়ে মৌলভীর দোকান এলাকায় যাই। এসময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি প্রাইভেট কারের ভেতর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখন আমি আরো কয়েকজনকে জানাই। এরপর উপস্থিত লোকজন বিষয়টি দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।”
দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. নাফিসা নুর চৌধুরী জানান, রিয়াজকে দেখে মনে হয়েছে তাকে চেতনানাশক খাওয়ানো হয়েছে। তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।
আজ সন্ধ্যার দিকে জ্ঞান ফেরার পর প্রাইভেট কারের চালক নুরুজ্জামান রিয়াজ বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে কার চালাই। গত শনিবার বিকালে আমি একটি ভাড়া নিয়ে কুমিল্লায় যাই। কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে পৌঁছার পর যাত্রী নামাজ পড়ার জন্য গাড়ি থামানোর কথা বলেন। তখন আমি কার থামালে যাত্রী নামাজ পড়তে যান এবং আমি রাস্তায় পাশে দাঁড়াই। এসময় তিনজন লোক এসে আমার গাড়িতে উঠে বসে এবং আমাকে জোরপূর্বক ধরে অপর একটি এক্সনোহা মাইক্রোবাসে তুলে ফেলে। এরপর আমাকে একটি ওষুধ খাইয়ে দেয়। পরবর্তীতে কী হয়েছে তা আমি জানি না। আমাকে কী অবস্থায় কোথা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাও আমি জানি না। এমনকি আমি কুমিল্লা থেকে কীভাবে সাতকানিয়ায় আসলাম তাও জানি না।”
আজ সোমবার রাতে নুরুজ্জামান রিয়াজের বাবা নুর আলম বলেন, “গত শনিবার দুপুরের খাবারের পর রিয়াজ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর তার সাথে আর যোগাযোগ করা যায়নি। আজ জানতে পারলাম হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় প্রাইভেট কারের ভেতর তাকে পাওয়া গেছে। আমি ছেলেকে ফিরে পাওয়ায় আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি। তবে এ ঘটনায় আমি কোনো ধরনের মামলা করতে চাই না।”
দোহাজারী হাইওয়ে থানার এসআই মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা প্রাইভেট কারের দরজা খুলে হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় চালককে উদ্ধার করে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাই। প্রাইভেট কারটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। সন্ধ্যার দিকে চালক রিয়াজের জ্ঞান ফিরে। এরই মধ্যে প্রাইভেট কারের মালিক ও চালক রিয়াজের স্বজনরা থানায় আসেন কিন্তু তারা ঘটনার বিষয়ে মামলা করতে রাজি নন।”