সাতকানিয়ায় চাচাকে মারধরের কারণ জানতে চেয়ে ছুরিকাঘাতে খুন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ২২ নভেম্বর, ২০২৩ at ১:২৪ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে এক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম মো. শাহাদাত হোসেন (৩৫)।

একই ঘটনায় তার আরো দুই ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার ছদাহা মিঠাদীঘি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. শাহাদাত হোসেন ছদাহা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রোয়াজিরপাড়ার মো. ইউনুছের পুত্র ও ছদাহা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক।

জানা যায়, নিহত শাহাদাতের চাচা আবু তালেব একই এলাকায় একটি বাড়িতে নৈশ প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত সোমবার দিবাগত রাতে একই এলাকার মো. ইসমাইলের পুত্র মো. তারেক কয়েকজন সঙ্গীসহ ওই বাড়ির পাশে মাদক সেবন করতে যায়। তখন আবু তালেব তাদেরকে সেখানে ইয়াবা সেবন করতে নিষেধ করেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তালেবকে ইট দিয়ে আঘাত করে চলে যায়।

এ ঘটনায় আবু তালেব গতকাল মঙ্গলবার সাতকানিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে, গতকাল রাত ১০টার দিকে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন ছদাহা মিঠাদীঘি এলাকায় তার নিজের মুদি দোকানে অবস্থান করছিলেন। এসময় তারেককে সেখানে দেখে শাহাদাত তার চাচাকে মারধরের কারণ জানতে চান। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এরপর তারেক সেখান থেকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর তারেক আরো কয়েকজন সহযোগীসহ মিঠাদীঘি এলাকায় এসে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শাহাদাত হোসেনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে।

খবর পেয়ে শাহাদাত হোসেনের বড় ভাই আনোয়ার হোসেন ও ছোট ভাই মো. শাহনেওয়াজ ঘটনাস্থলে আসলে তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। ঘটনার সময় তারেকও ছুরিকাহত হয়।

পরে স্থানীয় লোকজন মো. শাহাদাত হোসেন, আনোয়ার হোসেন ও মো. শাহনেওয়াজকে উদ্ধার করে কেরানীহাট আশেশেফা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. শাহাদাত হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

আশেশেফা হাসপাতালের ডাক্তার খাইরুল ইসলাম রিজভী জানান, শাহাদাত হোসেনের পেটের বাম পাশসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে পৌঁছার আগেই তিনি মারা যান।

তার বড় ভাই আনোয়ার হোসেনকে গুরুতর অবস্থায় চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে মো. তারেককে আহত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে থানা পুলিশ।

নিহতের চাচা আবু তালেব বলেন, “আমি স্থানীয় দিলীপ নামের একজনের বাড়িতে নৈশ প্রহরী হিসেবে কাজ করি। গত সোমবার রাতে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী তারেক কয়েকজন সহযোগীসহ সেখানে মাদক সেবন ও বিক্রি করতে যায়। তখন আমি তাদেরকে বাধা দিই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমাকে মারধর করে। আমাকে মারধরের কারণ জানতে চাওয়ায় তারেক এবং তার সহযোগীরা ছুরিকাঘাত করে আমার ভাতিজাকে হত্যা করেছে।”

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার জানান, শাহাদাত হোসেন ও তারেকের মধ্যে পূর্ব থেকে বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জের ধরে তাদের মধ্যে সোমবার রাতেও ঝামেলা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল রাতে মিঠাদীঘি এলাকায় উভয়ের মধ্যে পুনরায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে শাহাদাত হোসেন নিহত ও তার দুই ভাই এবং তারেক আহত হয়। আহত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে তারেককে আটক করে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার মনজুরুল ইসলাম জানান, আহত তারেকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতসহ আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেফতার
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপির দুদিনের অবরোধ আজ থেকে