সাতকানিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। ফলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
গত মঙ্গলবার চরতিতে নৌকাডুবি ও পৌরসভার গোয়াজর পাড়ায় স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে নিঁখোজ হওয়া দুইজনের লাশ আজ উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকাডুবির ঘটনায় এখনো দুই শিশু নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ভেসে উঠছে রাস্তা-ঘাটের ক্ষতবিক্ষত চিত্র। বন্যাকবলিত বেশির ভাগ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকালে কেঁওচিয়া, বাজালিয়া ও পরানগড়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি। কিছু কিছু এলাকায় সেনাবাহিনীও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছে।
আগামীকাল শুক্রবার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। উঁচু এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক থেকে পানি নেমে যাওয়ায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এখনো উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। বিশেষ করে কেঁওচিয়া, বাজালিয়া, পুরানগড়, ধর্মপুর, কালিয়াইশ, নলুয়া, ঢেমশা, আমিলাইষ ও চরতিসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
এদিকে, গত মঙ্গলবার চরতিতে নৌকা ডুবে নিঁখোজ হওয়া আবদুর রহিম (৪৫) ও সাতকানিয়া পৌরসভার গোয়াজার পাড়ায় স্রোতের টানে ভেসে যাওয়া মো. ইদ্রিসের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকাডুবির ঘটনায় এখনো দুই শিশু নিখোঁজ রয়েছে।
বন্যা কবলিত লোকজন জানান, বসতঘর থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও খাবার রান্না করা যাচ্ছে না। ফলে মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন যাপন করছেন। চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম চৌধুরী বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করছেন।
এসময় তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের বন্যাকবলিত মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা মাঠে আছি। কোন মানুষকে না খেয়ে থাকতে হবে না।
কেঁওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ওচমান আলী বলেন, “বন্যার পানি কিছুটা নেমে গেছে। তবে এখনো অনেক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। বসতঘর থেকে পানি নেমে গেলেও অধিকাংশ ঘরে খাবার রান্না করতে পারছে না। আমি ইতিমধ্যে অনেকের মাঝে রান্না করা ও শুকনা খাবার বিতরণ করেছি।”
বাজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তাপস কান্তি দত্ত জানান, বন্যার পানি কিছুটা কমলেও মানুষ ঘরে ফিরতে পারছে না। অনেকের বসতঘর ভেঙে গেছে। আবার কারো ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও খাবার তৈরি করতে পারছে না। ফলে মানুষ খাবার নিয়ে চরম সংকটে রয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, “বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো অনেক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। বন্যায় মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৬৫ মেট্রিক টন চাউল, নগদ ৫ লক্ষ টাকা, ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২ হাজার লিটার পানি বরাদ্দ পেয়েছি। আগামীকাল শুক্রবার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান আসছেন।”