সম্রাটের দেশত্যাগ

আজাদী অনলাইন | রবিবার , ১৬ জুলাই, ২০২৩ at ৮:৩৩ অপরাহ্ণ

অবৈধ সম্পদের মামলায় জামিনে থাকা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের বিদেশ যাওয়ার অনুমতি স্থগিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে আবেদন করেছিল তার শুনানি হওয়ার আগেই তিনি দেশত্যাগ করায় সেই আবেদন অকার্যকর হয়ে গেছে।

শনিবার সম্রাট দেশ ছেড়েছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী মো. মনসুরুল হক চৌধুরী।

আজ রবিবার (১৬ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানির সময় আইনজীবী মনসুরুল এ কথা জানান।

তার আরেক আইনজীবী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম রিপন জানান, আগে নেওয়া অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনুযায়ী সম্রাট ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছেন।

অবৈধ সম্পদের মামলায় ঢাকার ষষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল আলম গত ১ জুন সম্রাটের পাসপোর্ট দুই মাসের জন্য তার জিম্মায় দেওয়ার এবং সেই সঙ্গে চিকিৎসার জন্য তাকে এক মাসের জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। ওই অনুমতি স্থগিত চেয়ে দুদক গত ১৩ জুলাই হাই কোর্টে আবেদন করে।

আজ রবিবার ওই আবেদনের বিষয়ে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। সম্রাটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল ও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম রিপন।

রিপন বলেন, “চিকিৎসার জন্য শনিবার রাতে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ভারতে চলে গেছেন। বিচারিক আদালতের আদেশ মেনেই তিনি দেশের বাইরে গেছেন। তিনি বিদেশ থেকে ফিরে এলে তা আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়া এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) রাখা হয়েছে। তবে দুদকের আবেদনের শুনানির আগে বিচারিক আদালতের দেওয়া আদেশ মতো সম্রাট বিদেশে চলে যাওয়ায় আবেদনটি এখন অকার্যকর (ইনফ্রাকচুয়াস)।”

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে সম্রাট আত্মগোপন করেন।

এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সেদিন বিকালে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।

প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র‌্যাবের পক্ষ থেকে।

ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়।

এরপর ওই বছরের (২০১৯) ১২ নভেম্বর দুদকের উপ পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

পরে ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ১১ মে’র মধ্যে চার মামলায় জামিন পান সম্রাট। কারাগারে যাওয়ার ৩১ মাস পর তার মুক্তি মেলে।

এরপর ২২ অক্টোবর সম্রাটের স্থায়ী জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী। তখন দুদকের পক্ষ থেকে স্থায়ী জামিনের বিরোধিতা করা হয়। পরে গত ১ জুন উভয়পক্ষের শুনানি শেষে সম্রাটকে এক মাসের জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৬ জুলাই পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।

তবে ৬ জুলাই অভিযোগ গঠনের শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও আদালত তা পিছিয়ে আগামী ২৮ আগস্ট দিন ঠিক করে দেয়। ওইদিন পর্যন্ত তার জামিন দেয় আদালত। এর মধ্যে গত ১৩ জুলাই সম্রাটের বিদেশ যাওয়ার অনুমতি স্থগিতে আবেদন করেছিল দুদক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাপ্তাইয়ে সুইডেন পলিটেকনিকের ছাত্র ২য় তলা থেকে পড়ে আহত
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় এক রাতে সাড়ে ৩ লাখ টাকার ৪ গরু চুরি