শিলং আদালতেও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের খালাসের রায় বহাল

পেকুয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ১ মার্চ, ২০২৩ at ৮:২৮ অপরাহ্ণ

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বাংলাদেশের সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের খালাসের রায় বহাল রাখা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শিলং দায়রা জজ আদালতের বিচারক শ্রী আইসরমন রিমবই এ রায় দেন।

রায়ে তিনি নিন্ম আদালতের রায় বহাল রেখে সরকারের আপিল আবেদনটি খারিজ করে দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিলং সানরাইজ গেস্ট হাউজে অবস্থানরত সালাহউদ্দিন আহমদ নিজেই।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ‘আত্মগোপন’ থাকা অবস্থায় রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী’ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ ৬২ দিন গুম থাকার পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং শহরের গলফ কোর্স মাঠের পাশে অসুস্থ অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।

পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির সহায়তায় তিনি পুলিশের হেল্প লাইনে ফোন করলে পুলিশ প্রথমে তাকে থানায় ও পরে মিমহামস নামের একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে।

১২ মে বাংলাদেশে বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে সেখান থেকে সিভিল হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সিভিলে সপ্তাহখানেক রাখার পর তার অবস্থার অবনতি হলে শিলং-এর বিশেষায়িত হাসপাতাল নিগ্রিমসে ভর্তি করা হয় তাকে।

সুস্থ হওয়ার পর জামিন পেলে শিলং শহরের বিষ্ণপুর সানরাইজ গেস্ট হাউজে অবস্থান করে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। দীর্ঘ ৪ বছর আইনি লড়াইয়ের পর বেকসুর খালাস পান তিনি।

২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হলেও কয়েক দফা সময় পিছিয়ে ওই বছরের ২৬ অক্টোবর আদালতের রায়ে অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলায় নির্দোষ হিসেবে রায় পান তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমদের আইনজীবী অনীল আগরওয়াল জানান, এ রায়ের ৫ মাস পর মেঘালয় সরকারের পক্ষে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়।

এ আপিলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর আইনি লড়াই শেষে গতকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি আবারো খালাস পান তিনি। এবার দেশে ফিরতে আর কোনো আইনি বাধা নেই সালাহউদ্দিন আহমদের।

উল্লেখ্য, সালাহউদ্দিন আহমদ ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এপিএস হিসেবে নিয়োগ পান। দীর্ঘ ৫ বছর দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে আবারো রাজনীতিতে সক্রিয় হন ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমদ।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসন প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর টানা ৩ বার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এসময় তিনি পেকুয়া উপজেলা প্রতিষ্ঠা সহ কক্সবাজার জেলায় কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেন। পরে ওয়ান ইলাভেনের সময় তিনি কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী এডভোকেট হাসিনা আহমদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সালাহউদ্দিন আহমদ গুম হওয়ার সময় বিএনপির’ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন এবং শিলংয়ে নির্বাসনে থাকা অবস্থায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাথমিক বৃত্তির সংশোধিত ফল রাত ১২টার মধ্যে
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় সবজির ব্যাগে ২০ লাখ টাকার জালনোট