খুন নাকি সড়ক দুর্ঘটনা!

রাঙ্গুনিয়ায় অজ্ঞাত যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১১ জুলাই, ২০২৩ at ১১:৫২ অপরাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় অজ্ঞাতনামা এক যুবকের গলা কেটে হত্যা করে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার গলাকাটা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাত পৌনে আটটার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার সেলিমা কাদের চৌধুরী কলেজ গেইট এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ ও স্থানীয়রা।

নিহত যুবকের আনুমানিক বয়স ৩৫ বছর। তার পরনে একটি টি-শার্ট এবং নিচের অংশে ট্রাউজার ছিল। এ ছাড়া লাশের গলার দিকে গভীর কাটার ন্যায় ক্ষত চিহ্ন রয়েছে এবং রক্তের ছোপ পেট ও মুখেও ছড়িয়েছে। কেউ তাকে গলা কেটে খুন করে ওই স্থানে ফেলে রেখে গেছে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন। আবার সড়ক দুর্ঘটনায়ও তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ। তবে অনেকটা নির্জন এই স্থানে দু’টি গাড়ির মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটেছে এমন কোনো চিহ্নও পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ বলছে হত্যাকাণ্ড নাকি সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত শেষে বলা যাবে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার রাত পৌনে আটটার দিকে চট্টগ্রাম শহরগামী একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক লাশটি রাঙ্গুনিয়ার সৈয়দা সেলিমা কাদের কলেজ গেটের সামনে থেকে কয়েকজন পথচারীদের অনুরোধে চুয়েট গেইটে নিয়ে যান অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেয়ার আশায়।

স্থানীয়রা ধারণা করেন, অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিকে কেউ গলা কেটে হত্যা করে সেলিমা কাদের কলেজ এলাকার নির্জন স্থানে ফেলে গেছে। পরে রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির ও রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গিয়ে চুয়েট গেইট থেকে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।

এই ব্যাপারে লাশটিকে বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো. নাছিরের সাথে কথা হয়। এই অটোরিকশা চালকের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়া। তিনি চট্টগ্রামের রাস্তারমাথা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

তিনি জানান, ভাড়া নিয়ে রাঙ্গুনিয়া থেকে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়িতে অন্য একজন যাত্রী ছিল। যাওয়ার পথে সেলিমা কাদের কলেজ গেইট এলাকায় কয়েকজন পথচারী রক্তাক্ত ওই ব্যক্তিকে দেখতে পেয়ে তাকে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেন। তারা লোকটি বেঁচে আছেন ভেবে চুয়েটের হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত নিতেই গাড়িতে উঠিয়ে দেন। চুয়েট গেটে গিয়ে বুঝতে পারেন লোকটি মারা গেছে।

পরে স্থানীয়দের সাহায্যে পুলিশ খবর পেলে তারা এসে লাশটি উদ্ধার করেন বলে জানান তিনি।

প্রত্যক্ষদশী নুরুল কবির জানান, নিহত ব্যক্তি ছিল রক্তাক্ত। তার গলায় ছুরিকাঘাত বা লোহার রডের ফুটো রয়েছে।

এটা কোনো সড়ক দুর্ঘটনা নয়, এটা পরিকল্পিত হত্যকাণ্ড হতে পারে দাবি করে তিনি বলেন, “ঘটনাস্থলে দু’টি গাড়ির সংঘর্ষের কোনো চিহ্ন নেই। তাছাড়া নিহত যুবক পথচারী হলে তাকে এই এলাকার কেউ না কেউ চিনত। আর সে একা কেন নির্জন এই স্থানে অবস্থান করবে তাও বলা যাচ্ছে না।”

এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, “এখনো লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে একটি গাড়ির হুইপার পাওয়া গেছে। তবে এটি হত্যাকাণ্ড নাকি সড়ক দুর্ঘটনা তা তদন্ত শেষে বলা যাবে। লাশের ময়নাতদন্ত করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। আত্মীয়-স্বজনদের খুঁজে বের করে তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হবে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধওমানে দুর্ঘটনায় নিহত হাটহাজারীর প্রবাসীর দাফন সম্পন্ন
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা