দুই বোনের একমাত্র ভাই রাঙ্গুনিয়ার স্কুল শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল (১৩)। আগামী শুক্রবার তার মেঝো বোনের বিয়ের নির্ধারিত তারিখ ছিল। তাই মায়ের সাথে বিয়ের বাজার করতে গিয়েছিল কিন্তু বাজার করে তার আর ফেরা হলো না। তার আগেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১২ জুলাই) রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার পোমরা সত্যপীর মাজারগেইট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় আহত তার মায়ের অবস্থাও আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
নিহত ফয়সাল পোমরা ইউনিয়নের ভোলারবাপের বাড়ি এলাকার প্রবাসী আবুল খায়েরের সন্তান এবং পোমরা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজন জাহেদুল আলম চৌধুরী আইয়ুব জানান, মেঝো বোনের বিয়ের বাজার করতেই মায়ের সাথে রাউজানের পাহাড়তলী গিয়েছিল ফয়সাল। বাজার করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা যোগে বাড়ি ফিরছিল তারা। ফেরার পথে পোমরা সত্যপীর মাজার গেইট এলাকায় এলে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাকের সাথে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে ফয়সাল।
অন্যদিকে, গুরুতর আহত তার মা আনোয়ারা বেগম (৪০) চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। একইদিন রাত দেড়টার দিকে নামাজের জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) খান নুরুল ইসলাম জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশটি বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিয়ে বাড়ির আনন্দ যেন মুহূর্তে বিষাদে রূপ নিয়েছে। চন্দ্রঘোনায় যেখানে নিহত ফয়সালের বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছিল সেখানেও চলছে শোকের মাতম।
শোক জানিয়ে চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর বলেন, “ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের মো. নুরু সওদাগরের ছেলে মো. নয়নের সাথে নিহত ফয়সালের বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। বিয়ের মাত্র একটা দিন বাকি ছিল। তার আগেই এমন মর্মান্তিক মৃত্যু সত্যিই মেনে নেয়া যায় না। আমি তার শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”