উরুগুয়েকে হারিয়ে নকআউট পর্বে পর্তুগাল জায়গা করে নিল ব্রুনো ফের্নান্দেসের জোড়া গোলে।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে সোমবার রাতে ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে পর্তুগাল। ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে থাকা পর্তুগাল শেষ ম্যাচে হার এড়াতে পারলেই হবে গ্রুপ সেরা।
আক্রমণাত্মক ফুটবলে ম্যাচের শুরু থেকে চাপ বাড়ায় পর্তুগাল। বল দখলেও একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রেখে বারবার আক্রমণ শাণাতে থাকে তারা। প্রথম ৩০ মিনিটে যদিও তেমন নিশ্চিত কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দলটি।
ঘর সামলে পাল্টা আক্রমণের কৌশল নেয় উরুগুয়ে। ৩২তম মিনিটে তেমনি এক প্রতি-আক্রমণে ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন রদ্রিগো বেন্তানকুর। কিন্তু ওয়ান-অন-ওয়ানে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন টটেনহ্যাম হটস্পারের এই মিডফিল্ডার।
এরপর থেকে সমান তালে আক্রমণে উঠতে থাকে উরুগুয়েও। তবে প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর কেউ কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
বিরতির আগে গোলের উদ্দেশ্যে পর্তুগাল আটটি ও উরুগুয়ে চারটি শট নেয়, তার মধ্যে কেবল বেন্তানকুরের ওই চেষ্টাই লক্ষ্যে ছিল।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা লড়াইয়ে ৪০তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় পর্তুগাল। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন নুনো মেন্দেস। পিএসজির এই ডিফেন্ডারের চোখেমুখে ফুটে ওঠে হতাশা।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত পর্তুগাল কিন্তু দ্রুত গতিতে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে জোয়াও ফেলিক্সের নেওয়া শট পোস্ট ঘেঁষে পাশের জালে লাগে।
এর তিন মিনিট পরই এগিয়ে যায় তারা। বাঁ দিক থেকে ব্রুনো ফের্নান্দেসের দারুণ এক ক্রসে বল কিছুটা বাঁক খেয়ে সরাসরি জালে জড়ায়। বল হাওয়ায় থাকা অবস্থায় হেড করতে লাফিয়ে উঠেছিলেন রোনালদো। বল তার মাথা ছুঁয়ে গেছে কি-না, তৈরি হয় ধোঁয়াশা।
ফিফা প্রথমে গোলদাতা হিসেবে পর্তুগাল অধিনায়কের নাম জানালেও পরে সিদ্ধান্ত পাল্টায়, গোলদাতা ফের্নান্দেস।
৭২তম মিনিটে একসঙ্গে জোড়া পরিবর্তন করেন উরুগুয়ে কোচ; দারউইন নুনেস ও এদিনসন কাভানিকে তুলে মাক্সিমিলিয়ানো গোমেস ও লুইস সুয়ারেসকে নামান।
মাঠে নামার ২ মিনিট ২৮ সেকেন্ড পরই গোল পেতে পারতেন গোমেস। কিন্তু তার বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে পোস্টে বাধা পায়। খানিক পর আরেক বদলি সুয়ারেসও ভীতি ছড়ান, কিন্তু তার কাছ থেকে নেওয়া শট পাশের জাল কাঁপায়।
মরিয়া হয়ে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে উরুগুয়ে। কিন্তু মেলেনি কোনো সাফল্যের দেখা।
উল্টো যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে সফল স্পট কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফের্নান্দেস। ডি-বক্সে ডিফেন্ডার হোসে হিমেনেসের হাতে বল লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি।
এরপরও যোগ করা সময়ের আরও ৬ মিনিট বাকি ছিল। কিন্তু উরুগুয়ে আর প্রতিপক্ষকে ভাবাতেই পারেনি।
শেষ দিকে বরং হ্যাটট্রিক পূরণের দারুণ দুটি সুযোগ পান ফের্নান্দেস। প্রথম দফায় তার কোনাকুনি শট গোলরক্ষকের পায়ে বাধা পায়। পরক্ষণে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ভাগ্যের ফেরে লাগে পোস্টে।
এই গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়ে পরের ধাপে যাওয়ার লড়াইয়ে আছে বাকি তিন দল। শেষ রাউন্ডে উরুগুয়ের শুধু ঘানার বিপক্ষে জিতলেই হবে না, প্রার্থনা করতে হবে যেন অন্য ম্যাচের ফল পক্ষে আসে।