ফুটবলের রাজার বিদায়

আজাদী অনলাইন | শুক্রবার , ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ at ১:১২ পূর্বাহ্ণ

চলে গেছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে।

৮২ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন ফুটবলের এই রাজা।

ব্রাজিলের সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

পেলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর কন্যা কেলি নাসিমেন্তো।

১৯৭০ সালে ব্রাজিল তৃতীয়বার বিশ্বকাপ ফুটবল জেতার পর পেলের উল্লাস

গত মাসের শেষদিন থেকে এই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে শুরুতে গণমাধ্যমে খবর আসে, তার অবস্থা গুরুতর। বিশেষ তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে তাকে। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার মেয়ে কেলি নসিমেন্তো জানান, নিয়মিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে তাঁর বাবাকে।

এরপর থেকে মাঝেমধ্যে পেলের সন্তানরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাবার শারীরিক অবস্থার কথা জানাতেন।

কিছুদিন আগে প্রকাশিত চিকিৎসকদের রিপোর্ট ও পরিবারের ভাষ্য থেকে জানা যায়, পেলের ক্যান্সারের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলবে বলেও জানানো হয়। এবারের বড়দিনও তাঁর কেটেছে হাসপাতালেই।

ব্রাজিল জাতীয় দল, সান্তোস ও নিউইয়র্ক কসমস, সব জার্সিতে কেবলই আলো ছড়িয়েছেন তিনি।

খেলোয়াড়ী জীবনে কখনই চোট বা অসুস্থতা সেভাবে ভোগাতে পারেনি তাকে কিন্তু শেষ বয়সে এসে শারীরিক নানা সমস্যায় ভীষণ ভুগতে হয়।

ফুটবলের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে অনেকের কাছে প্রশংসিত পেলে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০১৮ বিশ্বকাপ চলাকালে তাঁকে হুইলচেয়ারে বসা অবস্থায় দেখা যায়। সেই টুর্নামেন্টের এক মাস পরেই পেলেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি টিউমার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের পর থেকে তিনি ডাক্তারদের কাছ থেকে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন কিন্তু ২০২২ সালের শেষের দিকে তাঁকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। কাতার বিশ্বকাপজুড়ে এবং এরপর ক্রিসমাসের সময়ও পেলে সাও পাওলোর হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পেলের মেয়ে কেলি নাসিমেন্তো পুরো সময়জুড়ে অসুস্থ বাবার স্বাস্থ্যের খবরাখবর বিশ্ববাসীকে জানিয়েছিলেন।

বর্ণিল এক জীবন কাটিয়েছেন পেলে। পেয়েছেন অনেক স্বীকৃতি। ১৯৯৯ সালে শতাব্দীর সেরা অ্যাথলেট হিসেবে স্বীকৃতি পান আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছ থেকে। ২০০০ সালে ফিফার ‘প্লেয়ার অভ দ্য সেঞ্চুরি’ হয়েছেন ম্যারাডোনার সঙ্গে যৌথভাবে।

২১ বছরের ক্যারিয়ারে ১৩৬৩ ম্যাচ খেলে ফুটবল বিশ্বের রেকর্ড এক হাজার ২৮১টি গোল করেন পেলে।

ক্লাব ক্যারিয়ারের পুরোটাই তিনি কাটিয়েছেন সান্তোসে। ১৫ বছর বয়সে ক্লাব ও এক বছর পর জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় তাঁর। এরপর দেশের হয়ে ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ এর বিশ্বকাপ জেতেন পেলে। ১৯৭৭ সালে ফুটবলকে বিদায় বলেন এই কিংবদন্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবান্দরবানের রুমায় হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার ১
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্ব ফুটবলের প্রথম কিংবদন্তি পেলে আর নেই