পেকুয়ায় টানাবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে ২টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গ্রামগুলোতে কয়েক হাজার পরিবারের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের খবর পাওয়া গেছে বিশেষ করে নারী, শিশু ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্থানীয়রা।
আজ সোমবার (৭ আগস্ট) ভোরে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের বারবাকিয়া ফাঁড়ি খালের পূর্ব মেহেরনামা এলাকার পূর্ব পাড়া রাবারড্যাম সংলগ্ন বার্মার কুম অংশে এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়। পরে সন্ধ্যা ৫টার দিকে একই খালের ফাঁসের গুদাম এলাকায় আরো একটি ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে পানি ঢুকতে থাকে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ভোরে ওই বার্মারকুমে ছোট আকারে ভাঙন শুরু হলেও দুপুর নাগাদ ভাঙনটি প্রায় ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য হয়। পরে সন্ধ্যা ৫টার দিকে ফাঁসের গুদাম এলাকায় আরো একটি ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে সেখানেও প্রায় ১০০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়।
এতে করে সদর ইউনিয়নের বলির পাড়া, মোরার পাড়া, আবাসন, খাস পাড়া, হরিণাখালী, সরকারীঘোনা, নন্দির পাড়া, চিরাদিয়া, জাইল্যাখালী, বটতলিয়া পাড়া, চৈরভাঙ্গা, টেকপাড়া, বাংলা পাড়া সহ প্রায় ১৩টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ সংবাদ লেখার সময় পূর্ব মেহেরনামার স্থানীয় অধিবাসী আহসান উল্লাহর সাথে মোবাইল ফোনে কথা
হয়।
এ সময় তিনি বলেন, “বিগত বড় বড় বন্যাগুলোতেও তাদের বাড়িতে পানি উঠেনি কিন্তু আজকে তার ঘরের ভিতরই হাঁটুজল।”
তিনি জানান, হঠাৎ এত বেশী পানি উঠার কারণে স্থানীয়রা নারী, শিশু ও গাবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে। মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় কৃষক মহিবুল্লাহ জানান, পূর্ব মেহেরনামায় কৃষি জমি বেশী। এখানে সবজি সহ নানা ফসল উৎপাদন হয়। সবগুলোই আজ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কৃষকেরা কিছুদিন আগেই বীজতলায় ধান ফেলেছে বর্ষা মৌসুমে চাষ করার জন্য। এখন বীজতলাগুলো সব পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পেকুয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ বলেন, “টানা ভারি বর্ষণের কারণে পানির স্রোত এত বেশী যে বেড়িবাঁধটি ছোট আকারে ভাঙার সাথে সাথে রক্ষার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। আমরা এখন স্থানীয় লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার কাজ করছি।”
তিনি জানান, এই প্লাবনের কারণে স্থানীয় কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্বিতা চাকমা বলেন, “সকাল থেকে আমরা ভাঙন এলাকায় অবস্থান করে ভাঙন রক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা করেছি কিন্তু দুর্ভাগ্য প্রবল স্রোতে দু’টি স্থানে বেড়িবাঁধের ভাঙনের কারণে পেকুয়া সদরের বেশ কিছু গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখন আমরা মাইকিং করে স্থানীয়দের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের কাছে শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছি।”
আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর নিচতলায় পানি উঠলেও ২য় এবং ৩য় তলায় লোকজনকে আশ্রয় নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।