ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের তল্লাশিচৌকিতে ১৭ বছর বয়সী নাহেল পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর শুরু হওয়া সহিংসতা আজ বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) বিকালে নাহেলের মায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হলে আবারও সহিংসতায় রূপ নিয়েছে, ছড়িয়ে পড়েছে বিশৃঙ্খলা।
আরও সহিংসতার আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ প্যারিসের কিছু এলাকায় কারফিউ ঘোষণা করেছে। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ট্রাম এবং বাস পরিষেবাও।
ছেলের মৃত্যুতে শোকার্ত এই মায়ের সঙ্গে প্যারিসের কাছের একটি শহরে মিছিলে যোগ দিয়েছিল ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
এতে আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা। টিভি ফুটেজে গাড়ি জ্বলতে দেখা গেছে। উল্টে পড়ে থাকা যান দেখা গেছে রাস্তায়, লোকজনকে টিয়ার গ্যাস থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালাতে দেখা গেছে। আরেকটি ফুটেজে এক বিক্ষোভকারীকে পাথর ছুড়তেও দেখা যায়।
বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিয়ে মানুষেরা কিশোর নিহতের ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
রাস্তায় মিছিল করে বিক্ষোভকারীরা ‘নাহেলের জন্য ন্যায়বিচার চাই’ স্লোগান দিয়েছে। এই স্লোগান লেখা সাদা টি-শার্ট ছিল তাদের পরনে। সামনে থেকে এই মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নাহেলের মা। পুলিশের হাতে নিহত এক কৃষ্নাঙ্গের বোনও তার সঙ্গে যোগ দেন।
নাহেলের মা মোনিয়া ননতেরের আশা ছেলের স্মরণে তার এই বিক্ষোভ মিছিল প্যারিসের আশেপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে তার ছেলের স্মৃতিকে অম্লান রাখবে।
বিক্ষোভ শুরুর আগে মোনিয়া ফ্রান্সের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ছেলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “আমার জীবন, আমার হৃদয় আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এটা খুবই বেদনাদায়ক। তাকে ছাড়া সব শূন্য লাগছে।” তার ছেলে শ্রদ্ধাশীল ও দয়ালু ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ফ্রান্সে তৃতীয় রাতের মতো সহিংসতার আশঙ্কায় এর আগে বৃহস্পতিবারই ৪০ হাজার পুলিশ মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
পরে নিহত কিশোরের মায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্যারিসের উপকণ্ঠে কারফিউ জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হয়ে এ কারফিউ বহাল থাকবে আগামী সোমবার পর্যন্ত।