আমদানি শুরু হতেই ঝাঁজ কমছে পেঁয়াজের

তবে প্রভাব নেই খুচরা বাজারে

আজাদী অনলাইন | সোমবার , ৫ জুন, ২০২৩ at ৮:৫২ অপরাহ্ণ

আমদানির অনুমতি দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে তার কোনো প্রভাব এখনও দেখা যায়নি খুচরা বাজারে।

আজ সোমবার (৫ জুন) সকালে খাতুনগঞ্জে মানভেদে পেঁয়াজ কেজিতে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। একদিন আগে গতকাল রবিবার (৪ জুন) সকালে কেজি প্রতি দাম ছিল ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা আর সন্ধ্যায় দর উঠেছিল ৯০ টাকায়।

পেঁয়াজের দর রোজার ঈদের পর থেকেই বাড়তে শুরু করে। এক মাসের ব্যবধানে তা ৩০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় উঠে যায়। গত কয়েকদিন ধরে ১০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছিল।

কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার কথা বলে এতদিন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি কৃষি মন্ত্রণালয় না দিলেও পরিস্থিতি দেখে রোববার সায় দেয়। তার প্রভাবই দেখা গেল খাতুনগঞ্জে।

সোমবার সকালে কিছু বেচা বিক্রি হলেও দুপুরের পর থেকে ক্রেতাশূন্যই ছিল পেয়াঁজের আড়তগুলো।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, “আমদানির ঘোষণা আসার পর তার আড়তে সারাদিনে তেমন বেচা-বিক্রি হয়নি। এখান থেকে নিয়ে যারা খুচরা বিক্রি করেন, সেই ব্যবসায়ীরা ক্ষতির আশংকায় এ দিন পেঁয়াজ কেনেননি। খুচরা বিক্রেতারা ক্ষতির শংকায় এদিন বাজারে আসেননি। তাদের স্টকে থাকা পেঁয়াজ বিক্রির পর নতুন মাল তুলবেন।”

খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, বাজারে প্রত্যেক আড়তদার দিনে গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করলেও সোমবার তা ২০ থেকে ৩০ বস্তায় নেমে এসেছে। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে আমদানির পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলে বেচাকেনা স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছেন তারা।

আড়তদার বলাই পোদ্দার বলেন, “সকালে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় কিছু বিক্রি করলেও বিকালে একেবারেই বিক্রি হয়নি। বিকালে পেয়াঁজের দর কেজিতে মানভেদে ৬০ টাকা এবং এর নিচে নেমে এসেছে।”

আড়তে পেয়াঁজের দর কমলেও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব তেমন পড়েনি। চট্টগ্রামের প্রধান কাঁচাবাজার রেয়াজুদ্দিন বাজারে সোমবারও বাড়তি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে দাম রবিবারের চেয়ে সোমবার কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল।

রেয়াজুদ্দিন বাজারের জে কে ট্রেডার্সের বিক্রয় কর্মী ইয়াসিন জানান, তারা বড় আকারের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আর ছোট সাইজের পেঁয়াজ মানভেদে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছিল ভাই ভাই স্টোরসহ রেয়াজুদ্দিন বাজারের ভোগপণ্যের বেশিরভাগ দোকানে।

নগরীর এনায়েত বাজারের শেখ স্টোরে পেঁয়াজের দাম এখনো আগের মতোই ১০০ টাকা কেজি। এই দোকানের কর্মী মো. ইসমাইল বলেন, “আমরা বাড়তি দরে পেঁয়াজ কিনেছি আগে। এখনও সেগুলো বিক্রি করছি। বেশি দরে কেনা, তাই দাম কমাতে পারছি না।”

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, “এখনও নতুন আমদানি ঘোষণার কোনো মাল আড়তে আসেনি। দুই-তিনদিনের মধ্যে ভারত থেকে আমদানির পেঁয়াজ হয়ত ঢুকবে। তখন পেঁয়াজের দাম আরও কমবে এবং কয়েকদিনের মধ্যে দামে স্থিরতা আসবে।”

আমদানির ঘোষণার পরপরই আজ সোমবার সাতক্ষীরার ভোমরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়ে গেছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বা আইপি আবেদন অনুমোদন করা শুরু করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রথম দিনেই ২১০টি আইপি আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে, এতে পেঁয়াজের পরিমাণ ২ লাখ ৮০ হাজার ৮০০ টন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহালিশহরে হত্যার ঘটনায় ডিবির হাতে ধরা দুই আসামি
পরবর্তী নিবন্ধসব স্কুলের প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি ৮ জুন পর্যন্ত ছুটি