আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশ শেষে রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানে দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে আরও চারজন।
আজ শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকালে বায়তুল মোকাররম এলাকায় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ সমাবেশ শেষ হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে আধা কিলোমিটার দূরে গোলাপ শাহর মাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দীন মিয়া বলেন, “আওয়ামী লীগের সমাবেশ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে ছুরিকাঘাতের ওই ঘটনা ঘটে।”
সেই সময় রাস্তায় থাকা নেতাকর্মীরা দোড়াদৌড়ি শুরু করে। এক পর্যায়ে এক পক্ষের ধাওয়ায় অন্য পক্ষ সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের দিকে চলে যায়। শান্তি সমাবেশের মাইকে তখন বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা শৃঙ্খলা বজায় রাখুন, কোনো বিশঙ্খলায় জড়াবেন না।’
দুইপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পাঁচজন ছুরিকাহত হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাদের একজনকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, আহত চারজন হলেন মো. আরিফুল (১৮), জোবায়ের (১৮), রনি (৩২) ও মোবাশ্বের (২৮)। তবে যার মৃত্যু হয়েছে তার বয়স আনুমানিক ২৫ বছর জানা গেলেও নাম জানা যায়নি। ।
হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি (জরুরি বিভাগ) বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. আলাউদ্দীন বলেন, “ছুরিকাঘাতে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক মারা গেছে। বাকি চারজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের লোকজন ওই মারামারিতে জড়ায়।
শাহীন চেয়ারম্যান দাবি করেন, এই ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তারা তার অনুসারী।
অন্যদিকে, কামরুল ইসলাম বলেছেন, তার কোনো কর্মী ওই মারামারিতে জড়িত ছিল না।
শাহীন বলেন, “সমাবেশ শেষে আমার লোকজন বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। তখন পেছন থেকে এমপি কামরুল ইসলামের লোকজন হামলা করে। এতে আমার অনেক লোক আহত হয়েছে, একজন মারা গেছে শুনে আমি ঢাকা মেডিকেলে এসেছি। আর উনার লোকজন যে হামলা করেছে সেটা সবাই দেখেছে, ড্রোন উড়তে ছিল তখন, সব প্রমাণ আছে।”
আর কামরুল ইসলাম বলেন, “কিসের মারা গেছে, কে মারা গেছে। আর আমার লোকজন কোনো হামলায় ছিল না। আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না।”
আহতদের মধ্যে জোবায়ের হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলে, তার বাসা বংশালে। সেখানে একটি স্কুলে সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে।
পেটে ছুরির জখম নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই কিশোর দাবি করে সে ‘মোবাইল ফোনের কভার কিনতে’ গুলিস্থানে গিয়ে মারামারির মধ্যে পড়ে যায়। আহত অন্যদের সে ‘চেনে না’।
আহত রনির বাসা কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকায়। তার বুকে ছুরি লেগেছে। নিজেকে তিনি কেরানীগঞ্জ যুবলীগের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
আরিফুলের পায়ে ছুরির আঘাত লেগেছে। গুলিস্তান এলাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন বলে তার ভাষ্য।
মোবাশ্বেরের এর গায়ে লেগেছে ছুরির আঘাত। তিনি নিজেকে আরামবাগ এলাকার দিনমজুর হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।