নকআউট পর্বে মরক্কো-ক্রোয়েশিয়া

কানাডা-বেলজিয়ামের বিদায়

আজাদী অনলাইন | বৃহস্পতিবার , ১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ১১:১৭ অপরাহ্ণ

টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে জিততেই হবে এমন সমীকরণে মাঠে নেমে অবিশ্বাস্যভাবে একের পর এক সুযোগ হারান দেশটির রেকর্ড গোলদাতা। একটি পয়েন্ট পেয়ে লক্ষ্য পূরণ হয়ে গেল ক্রোয়েশিয়ার। বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় উঠল গত আসরের রানার্সআপরা।

কাতারের আল রাইয়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) ‘এফ’ গ্রুপের শেষ রাউন্ডের ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হওয়ায় নকআউট পর্বে উঠে যায় ক্রোয়েশিয়া।

একই সময়ে শুরু আরেক ম্যাচে কানাডাকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউটে উঠেছে মরক্কো। তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে আফ্রিকার দেশটির পয়েন্ট ৭। একটি জয় ও দু’টি ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া।

একটি করে জয় ও ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে বেলজিয়াম। কানাডা হেরেছে তিন ম্যাচেই।

ঘড়ির কাঁটায় ম্যাচের ১০ সেকেন্ডের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে আচমকা শট নেন ক্রোয়েশিয়ার ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচ। পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায় বল।

ত্রয়োদশ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন বেলজিয়ামের ড্রিস মের্টেন্স। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে কেভিন ডে ব্রুইনে পাস দেন বক্সে। ফাঁকায় পেয়ে উড়িয়ে মারেন মের্টেন্স।

দুই মিনিট পর ইয়ানিক কারাসকো ডি-বক্সে ক্রোয়েশিয়ার ক্রামারিচকে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে আক্রমণের শুরুতে ক্রোয়েশিয়ার একজন অফসাইডে থাকায় ভিএআরের সাহায্যে সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে বেলজিয়াম।

বিরতির আগে গোলের জন্য বেলজিয়াম শট নেয় পাঁচটি, ক্রোয়েশিয়া ছয়টি, তবে লক্ষ্যে ছিল না একটিও।

পুরোপুরি ফিট না হলেও লুকাকুকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মের্টেন্সের বদলি নামান বেলজিয়াম কোচ। মাঠে নামার চার মিনিটের মাথায় একটি সুযোগ পান তিনি। ডে ব্রুইনের ক্রসে ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার হেড করেন গোলরক্ষক বরাবর।

ক্রোয়েশিয়া বেলজিয়াম ম্যাচের উত্তেজনাপূর্ণ একটি মুহূর্ত

পরের ছয় মিনিটে তিনটি সেভ করে জাল অক্ষত রাখেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। প্রথমে মাতেও কোভাচিচের শটে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান তিনি। এরপর রুখে দেন মার্সেলো ব্রজোভিচ ও লুকা মদ্রিচের শট।

৬০তম মিনিটে আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া হয় বেলজিয়ামের। ডে ব্রুইনের পাস ধরে বক্সে ঢুকে শট নেন কারাসকো, প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের পায়ে বাধা পাওয়া বল পেয়ে যান লুকাকু। তার ডান পায়ের শট লাগে পোস্টে। দুই মিনিট পর আরেকটি সুযোগ পেয়ে কাছ থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।

নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আবারও হতাশ করেন লুকাকু। ডান দিক থেকে তোরগ্যান আজারের ক্রস দূরের পোস্টে বুক দিয়ে নামিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি তিনি।

শেষ দিকে ডে ব্রুইনের বদলি নামেন এদেন আজার। যদিও কিছু করে দেখাতে পারেননি রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড।

যোগ করা সময়ে বেলজিয়ামের সামনে সুযোগ আসে আরেকটি। আলগা বল চলে যায় ছয় গজ বক্সে লুকাকুর সামনে, দ্রুত ক্লিয়ার করেন ইয়োস্কো গাভারদিওল। উল্লাসে মাতে ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়ান শিবিরে যোগ হয় একরাশ হতাশা।

লুকাকু, ডে ব্রুইনে, আজার, কোর্তোয়াদের এই দলকে বলা হয় বেলজিয়ামের ‘সোনালী প্রজন্ম’। তাদের বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাব্য শেষ সুযোগ বলা হচ্ছিল এটিকে। কিন্তু পথচলা থেমে গেল গ্রুপ পর্বেই। ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবার এমন অভিজ্ঞতা হলো দেশটির।

চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া বেলজিয়ামের শুরুটা এবার মন্দ ছিল না। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর দলটি প্রথম ম্যাচে কানাডাকে হারায় ১-০ গোলে। কিন্তু পরের ম্যাচে মরক্কোর কাছে হেরে যায় ২-০ গোলে। সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারল না রবের্তো মার্তিনেসের দল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅর্থ পাচার হচ্ছে আমদানি-রপ্তানির আড়ালে
পরবর্তী নিবন্ধহেরেও শেষ ষোলোয় স্পেন, জিতেও বিদায় জার্মানির