মিতু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন আরও ৪ জন

আজাদী অনলাইন | সোমবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:৩৭ অপরাহ্ণ

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় জব্দ তালিকার দু’জন এবং সিআইডি’র ব্যালাস্টিক এক্সপার্টসহ ৪ জন স্বাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আজ সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ বলেন, “মিতু হত্যা মামলায় চারজন স্বাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে মোট ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আজকে কোনো স্বাক্ষীর জেরা হয়নি। এর মধ্যে সেসময় সিআইডি চট্টগ্রামে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (ব্যালাস্টিক এক্সপার্ট), ফলের দোকানদার, পুলিশ কন্সটেবল ও মিতুর একই ভবনের বাসিন্দা আছেন। আগামী ১৬ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।”

আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে সেসময় সিআইডি চট্টগ্রামে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক ব্যালিস্টিক এক্সপার্ট আবদুর রহিম বলেন, “২০১৬ সালের ৩০ জুন সিএমপি ডিবি’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. কামরুজ্জামানের কাছ থেকে পাওয়া স্মারক মূলে সাদা কাপড়ে মোড়ানো একটি কাগজের বাক্সের ভিতর সিলগালা অবস্থায় আলামত পাই। আলামত হিসেবে ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম পিস্তলের দু’টি অব্যবহৃত, একটি ব্যবহৃত ও একটি মিস ফায়ার হওয়া কার্তুজ, স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি পয়েন্ট ৩২ ক্যালিবারের রিভলবার, স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি রিভলবার পাওয়ার কথা আদালতে জানাই।”

এসব আলামতের বিষয়ে মতামত, ব্যালিস্টিক রিপোর্ট ও রাসায়নিক প্রতিবেদন তিনি পরীক্ষা শেষে জমা দেন বলে আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে জানান।

আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে জিইসি মোড়ের একটি ফল দোকানের কর্মচারী আবদুর রহিম বলেন, “ঘটনার দিন সকালে দোকান খুলতে গেলে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও জড়ো হওয়া লোকজন দেখতে পান তিনি। তারা জানায়, এখানে একজনকে সন্ত্রাসীরা মেরে চলে গেছে। সেখান থেকে পুলিশ ৩টি গুলি, একটি গুলির খোসা ও এক জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করে জব্দ তালিকা করে। আমাকে স্বাক্ষর করতে বলায় আমি স্বাক্ষর করি।”

সেসময়ের পাঁচলাইশ থানার কন্সটেবল রনিতা বড়ুয়া আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে বলেন, “ঘটনার দিন সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে এসআই ত্রিরতন বড়ুয়া ফোন করে বলেন, জিইসি মোড়ে একটা মরদেহ আছে। ওখানে যেতে। আরো দু’জন পুলিশ সদস্যসহ সেখানে যাই। ওখানে গিয়ে দেখি ওয়েল ফুডের সামনে কালো বোরকা পরা একটি মরদেহ পড়ে আছে। এসআই ত্রিরতন বড়ুয়া সুরতহাল করেন। তাকে সহযোগিতা করি। তিনি জব্দ তালিকাও করেন।”

মিতুর একই ভবনের বাসিন্দা উম্মে ফরহাদ আহমেদ সুরমা আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে বলেন, “আমার দুই ছেলেও ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে পড়ে। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে আমার স্বামী ফোন করে আমাকে জানায়, মিতু ভাবি মারা গেছে। আমি লিফট থেকে নেমে দেখি মাহির। ও আমাকে বলে, আমার আম্মু মারা গেছে। সে তখন কান্না করছিল। তাকে ভবনের ভিতরে পাঠিয়ে আমি ওয়েল ফুডের সামনে যাই। দেখি মিতু ভাবি রাস্তায় পড়ে আছেন রক্তাক্ত অবস্থায়। গুলির চিহ্ন দেখি। এরপর পুলিশ সুরতহাল করে। আমি স্বাক্ষর করি।”

ঘটনার আগের রাতে নিজেরা যে ভবনে থাকতেন সেখানে অন্য এক প্রতিবেশীর বাসায় একসাথে খাওয়া-দাওয়া করেছিলেন বলেও আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে জানান উম্মে ফরহাদ আহমেদ সুরমা।

তিনি বলেন, “আগের দিন রাতে আমাকে মিতু ভাবি ফোন করেছিলেন। ইন্টারকমে কল দেন। উনার কাছে এসএমএস আসে ছেলেকে আর্লি স্কুলে নিয়ে যেতে। উনি জানতে চান, আমার কাছেও এসএমএস এসেছে কি না। আমি বলেছি, না আসেনি। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আমরা একই বাসায় ছিলাম। সেখানে খাওয়া-দাওয়া করি।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফ থেকে মানব পাচার চক্রের ৪ সদস্য আটক, উদ্ধার সাত যুবক
পরবর্তী নিবন্ধসোজা কথা না শুনলে রাজপথে ফয়সালা হবে