খুলনা-বরিশাল দুই সিটিতেই নৌকা জয়ী

আজাদী অনলাইন | সোমবার , ১২ জুন, ২০২৩ at ৮:৩৭ অপরাহ্ণ

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন।

আজ সোমবার (১২ জুন) অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে তিনি ৯৪ হাজার ভোটে হারান ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়ালকে। এনিয়ে তিনি তৃতীয়বার এই নগরীর মেয়র হচ্ছেন।

বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতির মধ্যে নিরুত্তাপ প্রচারের পর গোলযোগহীনভাবেই এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়।

খুলনায় ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের সবক’টিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়। বিকাল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষের ছয় ঘণ্টার মধ্যে খুলনা নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে সমন্বিত ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার খালেক নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আউয়াল হাতপাখা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৬০ হাজার ৬৪টি।

খুলনায় মেয়র পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন মো. শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পাটি, লাঙ্গল- ১৮০৭৪ ভোট), এস এম শফিকুর রহমান (স্বতন্ত্র, টেবিল ঘড়ি- ১৭২১৮ ভোট), এস এম সাব্বির হোসেন (জাকের পার্টি, গোলাপ ফুল- ৬৯৬ ভোট)।

খুলনা সিটিতে এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। তার মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন; নারী ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন।

মেয়র পদে ৫ জন ছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

খুলনায় গোলযোগ না হলেও ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী আউয়াল ইভিএম নিয়ে সন্দেহের কথা জানান।

এই নির্বাচনে ৪৮ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে।

গোলযোগ ছাড়া ভোটগ্রহণ হওয়ায় সন্তোষ জানান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।

এদিকে, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন।

আজ সোমবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে তিনি ৫৩ হাজার ভোটে হারান ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতী ফয়জুল করীমকে। তিনি এবার প্রথম এই নগরীর মেয়র হচ্ছেন।

বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতির মধ্যে প্রচার নিরুত্তাপ হলেও ভোটের দিন উত্তাপ ছড়িয়েছিল মেয়র প্রার্থী ফয়জুলের ওপর হামলা।

বরিশালে ১২৬টি ভোট কেন্দ্রের সবক’টিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়। বিকাল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষের ছয় ঘণ্টার মধ্যে নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে সমন্বিত ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফয়জুল করীম হাতপাখা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮২৮টি।

মেয়র পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন মো. ইকবাল হোসেন (জাতীয় পার্টি, লাঙ্গল-৬৬৬৫ ভোট), মো. আলী হোসেন হাওলাদার (স্বতন্ত্র, হরিণ- ২৩৮১ ভোট), মিজানুর রহমান বাচ্চু (জাকের পাটি, গোলাপফুল-২৫৪৬ ভোট), মো. আসাদুজ্জামান (স্বতন্ত্র, হাতি- ৫২৯ ভোট), মো. কামরুল আহসান (স্বতন্ত্র, টেবিল ঘড়ি- ৭৯৯৯ ভোট)।

বরিশাল সিটিতে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন এবং নারী ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন।

মেয়র পদে ৭ জন ছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৫ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের বর্জনের পাশাপাশি বৃষ্টির বাগড়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ৫১ দশমিক ৪৬ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান ভোট শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “বরিশালের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়া খুব সুন্দর ভোট হয়েছে।”

ভোটগ্রহণের মধ্যে দুপুরে নগরীর ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে হামলার মুখে পড়েন হাতপাখার মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করীম যা নিরুত্তাপ ভোটে উত্তাপ ছড়ায়।

চরমোনাই পীরের ছেলে ফয়জুল এই হামলার জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দায়ী করেছেন। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।

হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে এরই মধ্যে নির্দেশ দিয়েছে ইসি।

সেই ঘটনার জেরে ইসলামী আন্দোলন বরিশাল ও খুলনায় ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই সঙ্গে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাবুল আক্তারের গৃহসহকারীর জেরা সম্পন্ন
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে আওয়ামী লীগের মাহবুবুর মেয়র নির্বাচিত