জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে মধ্যরাতে আগুন

শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় বেঁচেছেন পরিচ্ছন্ন তত্ত্বাবধায়ক ও পিয়ন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৭ মার্চ, ২০২২ at ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ

নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন ২১নং জামালখান ওয়ার্ড কার্যালয় ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল রবিবার (৬ মার্চ) রাত সোয়া ১১টায় ওয়ার্ডের ৪র্থ তলায় ওয়ার্ড কার্যালয়ের অনলাইন অফিস এবং মশক নিধন কার্যক্রমে স্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।

মশক নিধন কার্যক্রমের ফগার মেশিন এবং মেশিনের তেলসহ কেমিক্যাল যেই রুমে ছিল সেই রুমেই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে জানান-অগ্নিকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী জামালখান ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন তত্ত্বাবধায়ক রিপন কিশোর রায়।

৪র্থ তলার যেই রুম থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে তখন সেই রুমে ছিলেন ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন তত্ত্বাবধায়ক রিপন কিশোর রায় এবং পিয়ন মো. নয়ন মিয়া।

তারা আগুন লাগার সাথে সাথে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।

এসময় ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন তত্ত্বাবধায়ক রিপন কিশোর রায়ের পরনের প্যান্টেও আগুন লেগে যায়। তিনি দ্রুত প্যান্ট খুলে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যান। এসময় তিনি সামান্য আহত হন। পিয়ন মো. নয়ন মিয়া নামতে পারেননি। তবে ৪র্থ তলার ঐ রুমে ডিজেল এবং কেরোসিন থাকায় মুহূর্তের মধ্যে দ্রুত আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এসময় নয়ন মিয়া সামনের বারান্দায় এসে তাকে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করতে থাকেন। নিচের থেকে লোকজন দ্রুত ছুটে এসে তাকে বাঁচানোর জন্য উপরে রশি ছুঁড়ে দেয়। নয়ন ভবনের পেছনে গ্রিলের সাথে রশি বেধে নিচে নেমে আসেন।

আগুনে ওয়ার্ড কার্যালয়ের অনলাইন অফিসের কম্পিউটার, সকল আসবাবপত্র এবং মশক নিধন কার্যক্রমের ফগার মেশিন সহ অফিসের অন্যান্য সকল সামগ্রী পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে।

তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তা জানাতে পারেননি।

ঠিক সময়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসলে অফিসের এতো মূল্যবান জিনিসিপত্র নষ্ট হতো না বলে জানিয়েছেন ভবনের নিচের এ আর মেডিকেল হলের মালিক মো. আবদুর রাজ্জাক।

এদিকে, আগুন লাগার খবর পাওয়ার সাথে সাথে ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে ছুটে আসেন জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন। এসময় তিনি ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করেন।

সোয়া ১১টার দিকে আগুন লাগার সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করা হলেও তারা ১১টা ৩৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে এসে আগুন নির্বাপণের চেষ্টা করে। নন্দনকানন এবং চন্দনপুরার দু’টি ইউনিট থেকে তিনটি গাড়ি এসে রাত ১২টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এই ব্যাপারে জামালখান ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন তত্ত্বাবধায়ক রিপন কিশোর রায় বলেন, “বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। যেখান থেকে আগুন লেগেছে সেখানে মশক নিধন কার্যক্রমের ফগার মেশিন এবং মেশিনের তেল ছিল। আগুন লাগার পর আমি সহ নয়ন আগুন নিভানোর চেষ্টা করি। আমার প্যান্টেও আগুন ধরে যায়। আমি দ্রুত নিচে নেমে আসি। নয়ন নামতে পারেনি। পরে সে পেছনের দিকে রশি বেয়ে নেমেছে।

ওয়ার্ড অফিস সহকারী আবদুল কুদ্দুস বলেন, “আমাদের তৃতীয় তলা কাউন্সিলর কার্যালয় রক্ষা পেয়েছে। আগুন তৃতীয় তলায় ছড়িয়ে পড়লে আমাদের ব্যাপাক ক্ষতি হতো। ফায়ার সার্ভিস ঠিক সময়ে আসলে এতো ক্ষতি হতো না। ৪র্থ তলায় আমাদের অনলাইন জন্মনিবন্ধনসহ সকল অনলাইনের কাজ চলে। সেখানে কম্পিউটারসহ সব জ্বলে গেছে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধবয়স্ক ভাতা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীর তিন বিএনপি নেতা জেলে