চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খানে সড়কের পাশের একটি ভবন ভাঙার সময় কিছু অংশ ধসে পড়ে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যাওয়ার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিও মারা গেছেন।
আজ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জামাল খানের দাওয়াত রেস্টুরেন্টের পাশে রতন ভট্টাচার্যের মালিকানাধীন দোতলা ভবনটি ভাঙার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
নিহতরা হলেন মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এবং রণ চক্রবর্তী (৩০)। পুরনো ওই ভবন ভাঙার কাজ পাওয়া ঠিকাদারের সুপারভাইজার জসিম ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান রণ চক্রবর্তী।
জসিম ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে। রণ সাতকানিয়ার কালিয়াইশ মৌলভীর দোকান এলাকার দুলাল চক্রবর্তীর ছেলে।
সড়কের পাশের ব্যক্তি মালিকানাধীন এই ভবন ভাঙার সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর বলেন, “ভবন ভাঙার সময় একাংশ ধসে পড়ে জসিম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত রণকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।”
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার অতনু চক্রবর্তী জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে মারা যান রণ।
ভবন ধসের পর সেখানে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজে যায়। আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আবদুল হালিম জানান, ভবনের ভেঙে পড়া অংশ অপসারণ করে দেখা হয়েছে, আর কেউ হতাহত হয়নি।
নগরীর ব্যস্ততম জামাল খান এলাকার ওই সড়কে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিনই সকালে ও বিকালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকরা ফুটপাত দিয়ে যাওয়া-আসা করে থাকেন।
তার মধ্যেই ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ওই এলাকার পাশের ভবনের বাসিন্দা সনজিব চে্ৗধুরী বিশু বলেন, “কয়েকদিন ধরে ভবনটি ভাঙা হচ্ছিল। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিকট শব্দ শোনার পর ঘটনাস্থলে আসি। কোনো প্রকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা না নিয়েই মালিক ভবনটি ভাঙছিল।”
২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, “রতনের মালিকানাধীন দোতলা পুরনো ভবনটি ভাঙার কাজ চলছিল। বিকালে দোতলার বাইরের অংশ সড়ক সংলগ্ন ফুটপাথে ধসে পড়ে। ওই ভবন ভাঙার সময় আগে ফুটপাথে প্রতিবন্ধকতা থাকলেও বুধবার তা ছিল না। ত্রিপল দিয়ে ঘিরে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভাঙার কাজ করা হচ্ছিল।”
স্থানীয়রা জানান, মালিক নিজেই ঠিকাদার নিয়োগ করে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে ভবন ভাঙার কাজ করছিলেন। দোতলার বাইরের কিছু অংশ ফুটপাত ও সড়কে গিয়ে পড়ে। আহত ও নিহত দু’জনই ওই সময় ফুটপাতে ছিলেন।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জামাল খানের ওই দোতলা ভবনের লাগোয়া আরো একটি দোতলা ভবন এবং অন্যপাশে চারতলা একটি ভবন রয়েছে।
রাস্তার পাশের ভবন ভাঙার সময় যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল তা নেওয়া হয়নি বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আবদুল হালিমও।
কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবীর জানান, ঘটনার পর ওই ভবন মালিক বা তাদের সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।