কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসা একটি ডলফিনকে বাঁচানো যায়নি। উখিয়ার ইনানীর পাটুয়ারটেক সৈকতে আজ মঙ্গলবার(২৩ আগস্ট) দুপুরে ভেসে এসেছিল ডলফিনটি।
খবর পেয়ে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট(বোরি)-এর বিজ্ঞানীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ডলফিনটিকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেন কিন্তু বেলা আড়াইটার দিকে সেটি মারা যায়। তারা এটিকে সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে এনে ময়নাতদন্ত করেন।
প্রাথমিকভাবে ডলফিনটি স্পিনার প্রজাতির এবং এটির মৃত্যু ট্রমা জাতীয় শারীরিক অসুস্থতায় হতে পারে বলে ধারণা তাদের।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার পারভেজ জানান, আজ সকাল ১১টার দিকে পাটুয়ারটেক সৈকত হতে প্রায় ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে সাগরে মুমূর্ষু অবস্থায় একটি ডলফিন ভাসতে দেখে স্থানীয়রা।
এরপর সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ডলফিনটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তারপরও সেটি মারা গেলে বোরি’র গবেষকবৃন্দ জেলা প্রশাসন, বনবিভাগ ও জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহায়তায় মৃত ডলফিনটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন।
এর আগে গত ২০ মার্চ ইনানী সৈকতে একটি মরা ডলফিন ভেসে আসে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতেও টেকনাফ সৈকতে দু’টি মরা ডলফিন ভেসে এসেছিল। তবে ডলফিনগুলোর ময়নাতদন্ত ও প্রজাতি শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ ছাড়াই সৈকতে পুঁতে ফেলে বনবিভাগ।
সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, “ময়নাতদন্তে ২৭ কেজি ওজনের ও ৫ ফুট দৈর্ঘের এই ডলফিনটির হৃদপিণ্ডের একটা অংশে রক্ত জমাট বাঁধা এবং যকৃতের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত পাওয়া যায়। তবে বাহ্যিক কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।”
ডলফিনটি গুরুতর অসুস্থ থাকায় দিকভ্রান্ত্র হয়ে উপকূলে চলে আসে এবং এক পর্যায়ে মৃত্যুবরণ করে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। তবে ডলফিনটির প্রজাতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি তারা। প্রজাতি শনাক্তের জন্য এর নমুনা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অভ বায়োটেকনোলজি(এনআইবি)তে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
মলিকিউলার টেস্টের পর ডলফিনটির প্রজাতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক।
ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটির ২০০৪ সালের জরিপে বঙ্গোপসাগরে প্রায় ১৬ হাজার ডলফিন শনাক্ত হয়েছিল যার মধ্যে প্রায় ৬ হাজার রয়েছে ইরাবতি ডলফিন।