পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’: গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচন বন্ধ

গোপন কক্ষে অনুপ্রবেশ, একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়া

আজাদী অনলাইন | বুধবার , ১২ অক্টোবর, ২০২২ at ২:৪৪ অপরাহ্ণ

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ চলে যাওয়ায় নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত নেয়।

আজ বুধবার (১২ অক্টোবর) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর বেলা সোয়া ২টার দিকে রাজধানী ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে এসে এ ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, “নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ায় আমরা পরিশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছি… সমগ্র নির্বাচনী এলাকা, গাইবান্ধা-৫ নির্বাচনী এলাকার ভোট কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে (রিটার্নিং কর্মকর্তাকে)। ওখানে এখন আর ভোট হচ্ছে না। পরবর্তীতে বিধি বিধান অনুযায়ী কী করতে হবে দেখব। কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।”

এ আসনের ১৪৫ কেন্দ্রের সবগুলোতেই এবার সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল; ঢাকার নির্বাচন ভবনে স্থাপিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হয় কেন্দ্রের পরিস্থিতি।

গোপন কক্ষে অবৈধভাবে একাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন ঘটনা সরাসরি দেখার পর বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক দফায় অর্ধ শতাধিক কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

অনেক কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে সাংবাদিকদের জানান সিইসি।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে সাংবাদিকদের সামনে এসে সিইসি বলেন, “আমার কাছে মনে হচ্ছে, অবশ্যই ভোট কেন্দ্রের ভেতরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেছে। কিছু অনিয়ম… গোপন কক্ষে অনধিকার প্রবেশ বা আইন ভঙ্গ করে ভোট দিয়ে দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি।”

নির্বাচনী কর্মীদের মধ্যে যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে সিইসি বলেছিলেন, “আমরা যা দেখেছি তা আপনাদের জানাচ্ছি- মূল অ্যাকশনটা নিয়েছি। ভোট বন্ধ করে দিয়েছি। চাকরিবিধি অনুযায়ী কি ব্যস্থা নেব দেখছি।”

এক্ষেত্রে ইভিএমের কোনো ‘দোষ’ দেখতে পাচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “এখানে মানবিক যে আচরণ তা দেখিয়ে দিচ্ছে, একই রঙের পোশাক পরে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এসব করছে। এটা সুশৃঙ্খল ভোটের পরিপন্থি। এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত। যারা আইন মানেন না, তারা দুর্বৃত্ত। আমরা যদি সংস্কৃতি ডেভেলপ করতে না পারি, নির্বাচন কমিশন এখানে বসে বসে সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবে? এটা সম্ভব না।”

গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোটার আছেন মোট তিন লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন। আর উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন পাঁচজন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া বাকিরা ভোট শেষের নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টা চারেক আগেই একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

এ আসনের সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিয়ম অনুযায়ী এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে জাহাজ ডুবি, ক্যাপ্টেনসহ ৫ জন নিখোঁজ
পরবর্তী নিবন্ধ“চট্টগ্রাম থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়েছে”