দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে যাওয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনসহ দুই প্রতিষ্ঠান এবং ১৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি পাচ্ছেন এবারের একুশে পদক।
আজ রোববার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালের এ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে। তাদের মধ্যে সাতজনই মরণোত্তর এ সম্মাননা পাচ্ছেন।
এবার ভাষা আন্দোলনে খালেদা মনযুর-ই-খুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শামসুল হক এবং হাজী মো. মজিবর রহমানকে একুশে পদক দেওয়া হবে। তাদের মধ্যে শামসুল হক মরণোত্তর এ সম্মাননা পাচ্ছেন।
অভিনয়ে মাসুদ আলী খান ও শিমূল ইউসুফ, সংগীতে মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আব্দুল হাকিম ও ফজল-এ-খোদা (মরণোত্তর), আবৃত্তিতে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, চিত্রকলায় কনক চাঁপা চাকমা, শিল্পকলায় নওয়াজীশ আলী খান পাচ্ছেন একুশে পদক।
মুক্তিযুদ্ধে মমতাজ উদ্দীন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), গবেষণায় ড. মো. আবদুল মজিদ, শিক্ষায় অধ্যাপক ড. মযহারুল ইসলাম (মরণোত্তর) ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরকে একুশে পদক দেওয়া হবে।
এছাড়া সমাজসেবায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও মো. সাইদুল হক, রাজনীতিতে অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম (মরণোত্তর) ও আকতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে ড. মনিরুজ্জামানকে একুশে পদককের জন্য চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে সরকার।
একুশে পদকের জন্য মনোনীত হওয়ার খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শিমূল ইউসুফ বলেন, “খবরটা জেনে খুব ভালো লাগছে, খুব আনন্দ হচ্ছে। শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে এই পদক দেওয়া হয়, আর এই পদকের জন্য আমাকে মনোনীত করা হয়েছে। এজন্য একটু বেশিই ভালো লাগছে।”
আবৃত্তি ও অভিনয়শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “লোকজন ফোন করে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। খবরটি অবশ্যই আনন্দের। আরো বেশি ভালো লাগছে, এজন্য যে পদকটি আমাকে জীবিত থাকতেই দেওয়া হয়েছে। মরোণত্তর পদকে আমার সায় নেই। যারা গুণিজন, তাদেরকে জীবিত থাকতেই পুরস্কার দেওয়া বা সম্মান জানানো উচিত। যুদ্ধে শহীদদের মরোণত্তর পদক দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু যারা জীবনের দীর্ঘ সময় সমাজকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করে চলেছেন, তাদেরকে জীবিত অবস্থায় সম্মান দেখানো উচিত। আমাকে জীবিত থাকতেই এই সম্মান দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং যারা আমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তাদের প্রতিও ভালোবাসা নিবেদন করছি।”
স্বাধীনতা পুরস্কারের পর রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘একুশে পদক’। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এ পদক দিয়ে আসছে সরকার।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কারপ্রাপ্তদের একুশে পদক দেবেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন চার লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।