হিমছড়ি সৈকতে এবার ভেসে এলো মস্তকবিহীন গলিত মরদেহ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৪ মার্চ, ২০২২ at ৯:৫৫ অপরাহ্ণ

গত ১৯ মার্চ শনিবার কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে হাজার হাজার মরা মাছ ভেসে আসা ও পরদিন রবিবার উখিয়ার পাটুয়ারটেক সৈকতে একটি মরা ডলফিন ভেসে আসার রেশ না কাটতেই গতকাল বুধবার মধ্যরাতে হিমছড়ি সৈকতে ভেসে এলো মানুষের মস্তকবিহীন মরদেহ সহ নানা প্রাণীর মৃতদেহ।

বুধবার রাত ১১টার দিকে মেরিন ড্রাইভের দরিয়ানগর-হিমছড়ি ১নং ব্রিজ পয়েন্টের সামনের সৈকতে গলিত মরদেহটির সাথে আরো ভেসে আসে মরা কচ্ছপ, প্লাস্টিকের জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, দড়ি, জাল, ককসিট, কাঠ, বাঁশ এবং প্লাস্টিকের টুকরা।

স্থানীয় বাসিন্দা বাহাদুর জানান, বুধবার রাত ১১টার দিকে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে সৈকতে ‘গেজ্ইান্না’ বা বর্জ্য ভেসে আসতে থাকে। এসময় মরা কাছিমসহ নানা ধরনের বর্জ্যের সাথে গলাবিহীন গলিত মরদেহটিও ভেসে আসে। পরে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে হিমছড়ি ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সৈকতেই পুঁতে ফেলে।

তিনি জানান, বর্জ্য আসার সময় দক্ষিণ-পাশ্চিম দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছিল এবং সামুদ্রিক ঢেউ সরাসরি কুলে আছড়ে পড়ছিল। তবে মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়াও বইছিল।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, দরিয়ানগর-হিমছড়ি পয়েন্ট সৈকতের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নানা ধরনের বর্জ্য ভেসে আসে। এসব বর্জ্যের মধ্যে প্লাস্টিকের জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, দড়ি, জাল, ককসিট, কাঠ, বাঁশ এবং প্লাস্টিকের টুকরা ছাড়াও মরা কচ্ছপ, সাপ ও মস্তকবিহীন মরদেহও ছিল।

এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে দুই দফায় বর্জ্য-বন্যা দেখা দেয় একই সৈকতে। এসময় নানা বর্জ্যের সাথে মরা কচ্ছপ, সাপসহ আরো বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর মরদেহ ভেসে আসে।

হিমছড়ি সৈকতে গত বছরের এপ্রিল মাসে পর পর দুই দিনে দু’টি মরা তিমি ভেসে আসে।

২০২০ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতেও টেকনাফ সৈকতে দু’টি মরা ডলফিন ভেসে আসে। এর কয়েকদিন আগে ডলফিন দু’টিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতে খেলা করতে দেখা যায়।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন জানান, হিমছড়ি সৈকতে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মস্তকবিহীন মরদেহ ভেসে আসার খবর পেয়ে তা উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহটি এতই গলিত ছিল যে শরীর থেকে মাংশ পচে হাড়গোড় বেরিয়ে এসেছে। মরদেহের শরীরে হাফপ্যান্ট পরা দেখে মরদেহটি কোনো জেলের এবং এক মাসের বেশি আগে সাগরে ডুবেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ডিএনএ টেস্ট ছাড়া মরদেহটির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়।

তিনি জানান, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হিমছড়ি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সৈকতেই পুঁতে ফেলেছে। মরদেহটির কোনো দাবিদার পাওয়া গেলে পরিচয় শনাক্তের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড় কেটে দেয়াল নির্মাণ করায় পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা
পরবর্তী নিবন্ধমাকে এসএমএস, অতপর হোটেলে ঝুলন্ত মরদেহ