বিশাল আকৃতির একটি মরা তিমি ভাসতে ভাসতে আজ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১০টায় কক্সবাজারের হিমছড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তরে কলাতলী সাইমন হোটেলের সামনের সমুদ্র সৈকতে এসে আটকা পড়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিমিটি সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে উপকূলের কাছাকাছি আসে।
বলিন জাতের এই মরা তিমিটি রাত সোয়া ৮টায় উপকূলের একই স্থানে অবস্থান করছিল বলে জানান বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউেেটর (বোরি) বিজ্ঞানীরা।
এর আগে ২০২১ সালের ৯ ০ ১০ এপ্রিল একইস্থানে দুটি মৃত তিমি ভেসে এসেছিল। ওই তিমিগুলোও একই প্রজাতির ছিল বলে জানান বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক(অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর।
তিনি বলেন, “আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে হিমছড়ি উপকূলের কাছাকাছি একটি তিমি ভেসে আসার খবর পেয়ে বোরি’র সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে র্যাপিড একশন টিমের বিজ্ঞানীরা ঘটনাস্থলে যান কিন্তু তিমিটি সৈকত থেকে দূরে অবস্থান করায় সাগরে ড্রোন পাঠিয়ে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণের পর এর প্রজাতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।”
তিমিটি অন্তত এক সপ্তাহ আগেই মারা গেছে বলে মনে করেন বোরি’র সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “তিমিটির শরীরে বিভিন্ন অংশে পচন ধরায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মৃত তিমিটির শরীরে জাল ও বয়া পেঁচানো রয়েছে। মাথায় আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। সাধারণত মৎস্য শিকারীদের জালে আটকা পড়ে, জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে কিংবা সমুদ্র দূষণের কারণে পরস্পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও দিকভ্রান্ত হয়ে উপকূলের অগভীর জলে এসে আটকা পড়ে মারা যায় তিমি।”
তিনি জানান, উপকূলে ভাসতে থাকা এই তিমিটি ‘ব্রাইড’স হোয়েল’ বা বলিন তিমি হিসাবে পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম বলিনোপেট্্রা ইডেনি। এ প্রজাতির তিমির দাঁত নাই। এরা মুখের মধ্যে চিরুনির মতো একটি অংশ দিয়ে খাবার প্রক্রিয়াজাত করে।
বোরি’র বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ, মৎস্য অধিদপ্তর, বনবিভাগ ও প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে যান।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম জানান, বিষয়টি বনবিভাগের ওয়াইল্ড লাইফ বিভাগকে জানানো হয়েছে। তবে তিমিটি সমুদ্রতীরে না আসা পর্যন্ত কিছুই করা যাচ্ছে না। সৈকতে আসার পরই সেটিকে পুঁতে ফেলা সম্ভব হবে।
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে প্রায়ই নানা সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ এবং জৈব-অজৈব বর্জ্য ভেসে আসে। গত তিন মাসে ভেসে আসে শত শত মরা রাজকাঁকড়া, জেলিফিশ, কচ্ছপ ও ডলফিনসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী।












